
ডেস্কও ওয়েব ডেস্কঃ “কিছু তো ভুল হতেই পারে। ভুলত্রুটি সব জায়গাতেই হয়। ইউরোপীয়
দেশগুলোতেও এমন ঘটছে। ত্রিপুরা তো আর পৃথিবীর বাইরে নয়”। এই উন্নাসিক বার্তা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
উল্লেখযোগ্য যে,
অক্সিজেনের অভাবে আগরতলা জিবিপি হাসপাতালে রোগী মারা যাচ্ছে। চিকিৎসকদের কোভিড ইউনিটে
যাতায়াত নেই। সিটি স্ক্যান, এক্স-রে এবং অন্যান্য মেশিনগুলো কোন কাজ করছে না। এই মহামারির
জটিল সময় রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে এমন হাজারো অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু এই সব
অভিযোগই ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সামান্য ভুল বলে মনে হচ্ছে। তাঁর এই উন্নাসিক,
দাম্ভিক বার্তায় হতচকিত রাজ্যবাসী।
বিপ্লব এখানেই থামেননি।
তিনি আরো বলেন, ত্রিপুরার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অত্যন্ত ভালো জায়গায় রয়েছে। তিনি সমালোচনার
পক্ষপাতী নন। জানান, এই সময় সমালোচনার নয়। চিকিৎসকরা তাঁদের ১০০ শতাংশ দিয়ে চেষ্টা
চালিয়ে যাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব এই কঠিন সময় স্বাস্থ্য খাতের ভুল-ত্রুটিগুলো
নিয়ে সমালোচনা করতে নিষেধ করছেন।
এই সব কথাই বিপ্লব
দেব বলেছেন শনিবার বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় জলবাহী জাহাজের ট্রায়াল রান পরিদর্শন
করতে গিয়ে সোনামুরায় উপস্থিত হয়ে! ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন,
মারণ করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে ত্রিপুরা বর্তমান স্টেজ ১ পেরিয়ে স্টেজ ২’এ পৌঁছেছে।
তবে রাজ্যের অবস্থা
শোচনীয় হয়ে যাচ্ছে যদিও মন্ত্রীর কোন ভ্রূক্ষেপ নেই। তিনি বলেন, এমন গোটা পৃথিবীতেই
হচ্ছে। ত্রিপুরায় এই ঘটনা নতুন নয়। চিকিৎসকরা এর আগেই জানিয়েছিলেন, অক্টোবরের আগ পর্যন্ত
করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাবে। এটি কোন বিষয় নয় । রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুরোপুরি
ঠিক আছে।
রাজ্যে এত ঘটনা
ঘটে যাওয়ার পরও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এইসব কোন বিষয় নয়। করোনার সেকেন্ড স্টেজ বা দ্বিতীয়
পর্যায় হচ্ছে সম্প্রদায় সংক্রমণ বা যাকে বলে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন। উল্লেখ্য যে, রাজ্য
সরকার কমিউনিটি সংক্রমণের সত্য এই প্রথমবারের জন্যে স্বীকার করেছে।
এর আগে অবশ্য চিকিৎসকরা
দীর্ঘদিন ধরেই সম্প্রদায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কথা বলে আসছিলেন। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত
সরকার কোন কথা স্বীকার করেনি। এবার মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং মুখ খুললেন স্টেজ-২ নিয়ে। তবে
সরকার এতদিন পর মুখ খুলে করোনার স্টেজ-২ এর কথা বললেও বহু বিশিষ্ট চিকিৎসকের মতে, ত্রিপুরায়
ইতিমধ্যে স্টেজ ২ পার হয়ে গেছে। ভয়ানক অবস্থা শুরু হয়েছে রাজ্যে, ত্রিপুরা বর্তমান
করোনার তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, করোনার
স্টেজ-২ হচ্ছেঃ যখন আক্রান্ত ব্যক্তিদের থেকে স্থানীয়ভাবে সংক্রমণ হয়। যেমন, যারা
বিদেশ ভ্রমণ করেছেন তাদের আত্মীয় বা পরিচিতজনের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়। অর্থাৎ ভাইরাসের
উৎস জানা যায়।
স্টেজ থ্রি: যখন
এতে বৃহত্তর অঞ্চলের মানুষ সংক্রামিত হয়। সম্প্রদায়ের সংক্রমণ তখনই হয় যখন কোনও রোগী
কোনও সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে না আসা সত্ত্বেও বা আক্রান্ত দেশগুলির মধ্যে কোনও
একটি দেশে সফর না করা সত্ত্বেও তাঁর শরীরে ওই রোগের সংক্রমণ ঘটেছে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে
উৎস খুঁজে পাওয়া যায় না।
বর্তমান, ত্রিপুরায়
বর্তমান পজিটিভিটি রেট প্রায় ৫ শতাংশের কাছাকাছি। শনিবার রাতে করোনা পজিটিভের ক্ষেত্রে
ত্রিপুরা ১৫ হাজার অতিক্রম করেছে। রাজ্যে বর্তমান মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা
১৫ হাজার ১১৯ জন। মারা গেছেন ১৪৫ জন।

0 মন্তব্য