
ডেস্কও ওয়েব ডেস্কঃ রাজ্যের জোট সরকারের বিধায়ক ধনঞ্জয় ত্রিপুরা ফের খবরের শিরোনামে। তাঁর স্ত্রী আদালতে বিধায়কের বিরুদ্ধে ঘরোয়া হিংসার মামলা দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী মহিলার আইনজীবী সুব্রত রায় জানিয়েছেন, সম্প্রতি আগরতলায় সাত নম্বর আদালতের প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট এই মামলায় একটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দিয়েছেন। ম্যাজিস্ট্রেট মিস তনেঝা তাঁর আদেশে বলেন বিধায়ককে আগরতলায় স্ত্রীর জন্য আলাদা থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া উচিত এবং মামলার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত স্ত্রীকে মাসিক দশ হাজার টাকা দেওয়া উচিত। সুব্রত রায় জানান, বিধায়ক ধনঞ্জয় ত্রিপুরা এবং তার আত্মীয়স্বজনরা নিয়মিত তার স্ত্রীর উপর নির্যাতন চালায়।
উল্লেখ্য যে, বিয়ের আগে থেকেই ওই যুবতীর সঙ্গে ধনঞ্জয় ত্রিপুরার সম্পর্ক ছিল এবং তারা শারীরিক সম্পর্কে ছিলেন। তবে ২০১৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জিতে বিধায়ক হওয়ার পরে তিনি ওই যুবতীকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেছিলেন। ফলে ওই যুবতী বিধায়ক ধনঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশে মামলা দায়ের করেন।
বিধায়ক হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেছিলেন কিন্তু তা খারিজ হয়। ফলে গত বছরের জুন মাসে তিনি আইনি সমস্যা থেকে বাঁচতে বাধ্য হয়ে অভিযোগকারিণীকে একটি মন্দিরে বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের পরে বিধায়ক আদালতে আবেদন জানান, যেহেতু তিনি মেয়েটিকে বিয়ে করেছেন তাই বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস ও ধর্ষণ অভিযোগটি খারিজ করা হোক। অভিযোগকারিনীর সঙ্গে কথা বলার পরে আদালত মামলা খারিজ করে।
বিয়ের পরে তারা দু'জনই আগরতলার বিধায়ক হোস্টেলে তিন থেকে চার মাস ছিলেন। অভিযোগ, সেখানে তিনি স্ত্রীর উপর নির্যাতন শুরু করেন। ভদ্রমহিলা আবার পুলিশে গিয়ে তার স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর রাতে পশ্চিম আগরতলা মহিলা থানায় গৃহবধূ নির্যাতনের অভিযোগে আদিবাসী পিপলস ফ্রন্ট ত্রিপুরার (আইপিএফটি) বিধায়ক ধনঞ্জয় ত্রিপুরার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। ধনঞ্জয় ছাড়াও শাশুড়ি খড়্গশ্রী ত্রিপুরা, শ্যালক চন্দ্রজয় ত্রিপুরা এবং শ্যালিকা মধুরানি ত্রিপুরার বিরুদ্ধেও গার্হস্থ্য হিংসার মামলা দায়ের করেছেন ধনঞ্জয়ের স্ত্রী। বিধায়ক ধনঞ্জয় ত্রিপুরের বিরুদ্ধে ৪৯৮ (এ) এবং ৩০৭ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সুব্রত রায় অভিযোগ করেছেন, মামলাটি নথিভুক্ত করার পরেও পুলিশ কোনও তদন্ত করেনি বা বিধায়ককে গ্রেপ্তার করেনি। আইনজীবী সুব্রত রায় জানিয়েছেন, ধনঞ্জয় পরে স্ত্রীকে আগরতলা থেকে গন্ডাচেরাতে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং সেখানেও তাঁর উপর নির্মম নির্যাতন করেন। তিন-চার মাস আগে ভদ্রমহিলার পিতা কোনওভাবে কীভাবে তাঁর মেয়েকে আগরতলায় নিয়ে এসেছিলেন এবং তাঁরা ফের বিধায়কের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। যেখানে প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দিয়েছিলেন।
তবে আইপিএফটি নেতারা ধলাই জেলার গণ্ডাচেরার দলীয় বিধায়কের কর্মকাণ্ড নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে। এক বছরের মধ্যে তিন বার দলের প্রতিশ্রুতিবান যুব বিধায়কের এই ধরণের মামলায় জড়িয়ে পড়ায় সভাপতি এন সি দেববর্মা এবং আইপিএফটি-র দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তি মেবার কুমার জামতিয়া-সহ আইপিএফটি শীর্ষ নেতাদের বিব্রত করেছে।

0 মন্তব্যসমূহ