
ডেস্কও ওয়েব ডেস্কঃ আরো এক ঐতিহাসিক বাণিজ্যপথের সূচনা হলো ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে। বাংলাদেশ থেকে নদীপথে
পণ্য পরিবহণ শুরু হয়ে গেল ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য ত্রিপুরায়।
বৃহস্পতিবার, ৩
সেপ্টেম্বর, কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে একটি সিমেন্ট বোঝাই জলযান রওনা হয়েছে ত্রিপুরার
উদ্দেশে। গোমতী নদী দিয়ে আগামিকাল ৫ সেপ্টেম্বর এটি এসে পৌঁছবে সোনামুড়ায়। ত্রিপুরার
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই খুশির খবর রাজ্যবাসীকে জানিয়েছেন।
বিদেশ মন্ত্রক এক
বিবৃতিতে জানিয়ে দিয়েছে, সোনামুড়ায় উপস্থিত হওয়া জলযানকে স্বাগত জানাবেন ত্রিপুরার
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এবং বাংলাদেশে স্থিত ভারতীয় হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলি
দাশ। এই বাণিজ্যকে ঐতিহাসিক বলা হচ্ছে এজন্যেই যে ওপার বাংলা থেকে এই প্রথম কোনও পণ্য
নদীপথে আসছে ত্রিপুরায়।
সম্প্রতী দু-দিনের
ঢাকা সফর সেরেছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। তিনি ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক
আরো মজবুত করার লক্ষ্যে বাণিজ্যে অধিক থেকে অধিকতর জোর দেয়ার কথা বলেছেন। এদিকে বাংলাদেশস্থিত
ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাশ দু-বন্ধু দেশের সম্পর্ক মজবুত করা প্রসঙ্গে বলেন,
পর্যটনক্ষেত্র আরো এক মাধ্যম, যার মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক আরো দৃঢ় করা যাবে।
জলপথে বাংলাদেশ
থেকে ত্রিপুরায় পণ্য আসার বিষয়টি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও নতুন মাইলফলক তৈরি
করেছে। আপাতত পরীক্ষামূলক ভাবে প্রথম জলযানটি রওনা হয়েছে বাংলা থেকে। জলবাহী জাহাজটি
বাংলাদেশ থেকে সোনামুরায় ২০০ ব্যাগ সিমেন্ট বহন করে চলেছে। ইতিহাসে এই প্রথমবার যে
কোনও ধরনের পণ্য জাহাজে করে ত্রিপুরায় পৌঁছাবে।
এর আগে বাংলাদেশ
থেকে নদীপথে পণ্য পরিবহণের বিষয় নিয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব
দেব। তিনি জানিয়েছিলেন, “কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে ত্রিপুরার সোনামুড়া পর্যন্ত গোমতী
নদী দিয়ে পণ্য আনার জন্য বাংলাদেশ সরকার অনুমতি দিয়েছে। এ জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী মনসুখ মান্ডভিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বাংলাদেশ
সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন”।
দাউদকান্দি থেকে
গোমতী নদী দিয়ে মুরাদনগর, দেবীদ্বার, ব্রাহ্মণপাড়া, বুড়িচং, কুমিল্লা সদর ও বিবিরবাজার
হয়ে সোনামুড়ায় পণ্য নেওয়া হবে। সেখান থেকে সড়কপথে পণ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় যাবে।
উল্লেখযোগ্য যে,
১৯৭২ সালে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে নদীপথে পণ্য পরিবহণের জন্য প্রটোকলে সই হয়েছিল। সেখানে
বলা হয়েছিল, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো হবে এবং দ্বিপাক্ষিক
বাণিজ্যের প্রসার ঘটানোর চেষ্টা হবে।

0 মন্তব্যসমূহ