
ডেস্কও ওয়েব ডেস্কঃ রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে পুরোপুরিভাবে। এটি আর বলার অপেক্ষা রাখে
না। জিবিপি হাসপাতালের কোরিডোরে কোভিড রোগীর মৃতদেহ পড়ে থাকার দৃশ্য ইতিমধ্যেই ভাইরাল
হয়ে পড়েছে। রাজ্য সরকারের এ বিষয়ে কোন সাড়াশব্দ নেই।
এবার আরো এক মর্মান্তিক
দৃশ্যের সাক্ষী থাকল ত্রিপুরা! আমবাসা হচ্ছে ত্রিপুরার ধলাইয়ের জেলা সদর। সোমবার আম্বাসার
লোকজন এক বিরল ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে। ধলাই জেলা হাসপাতাল থেকে প্যাডেল রিক্সায় করে
একটি লাশ নিয়ে যাওয়া হয়েছে আমবাসা থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে ম্যাগাজিন পাড়াতে।
মৃতের বাড়ি ম্যাগাজিন পাড়ায়। পরিবারের আর্থিক ক্ষমতা ছিল না কোন গাড়িতে করে মৃতদেহ
বহন করার! তাই পরিবারের সদস্যরা বাধ্য হয়েছেন প্যাডেল রিকশায় পরিবারের সদস্যের মরদেহ
নিয়ে যেতে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্সেরও ব্যবস্থা করা হয়নি।
এমন মর্মান্তিক
দৃশ্য সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাল হয়ে গেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়! আসলে রাজ্যের মানুষের প্রতি প্রশাসন
কতটুকু সতর্ক বা সজাগ, তাঁদের ভূমিকা কী এ বিষয়ে প্রশ্ন উঠছে।
বিরোধীরা এই ইস্যুতে
প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছে। তারা জানাচ্ছে, বিজেপি আমলে মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা এতটাই
খারাপ যে তাঁরা পরিবারের কেউ মারা গেলে পর্যন্ত সেই মরদেহ বহন করার জন্যে একটি গাড়ির
ব্যবস্থা করার মতো আর্থিক ক্ষমতাটুকু রাখতে পারছেন না।
মৃত ব্যক্তির নাম
গোপাল দেবনাথ(৫৫)। ম্যাগাজিন এলাকার রিকশা চালক তিনি! সোমবার নিজের দৈনিক কাজ সেরে
বাড়ি ফিরছিলেন। আমবাসা থেকে ম্যাগাজিন পাড়ায় বাড়ি যাওয়ার পথেই ধলাই জেলা কাউন্সিল
অফিসের কাছে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। রিক্সাটি তাঁর সঙ্গেই ছিল। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন
তিনি । ঘটনার খবর আমবাসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে পৌঁছলে তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে
উপস্থিত হয়ে গোপালবাবুকে কুলাইয়ের ধলাই জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান।
মঙ্গলবার সকালে
জেলা হাসপাতালে গোপাল দেবনাথ মারা গেছেন। এ খবর নিশ্চিত করেন তাঁর দাদা। তবে আশ্চর্যজনক
বিষয় হলো, মৃতের কোনও ময়নাতদন্ত না করেই পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
অন্যদিকে, কীভাবে মরদেহ হাসপাতাল থেকে মৃতের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে সে বিষয়েও কোন
পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। এমনকি একটি অ্যাম্বুলেন্সেরও ব্যবস্থা করা হয়নি লাশ বাড়িতে
পৌঁছানোর জন্যে! শেষ পর্যন্ত দরিদ্র এই পরিবারটি গোপাল বাবুর মরদেহ রিকশায় বহন করেই
আনতে বাধ্য হয়েছে।

0 মন্তব্যসমূহ