About Me

header ads

আদালত অবমাননায় ১ টাকা জরিমানা প্রশান্ত ভূষণের!


ডেস্কও ওয়েব ডেস্কঃ আদালত অবমাননার শাস্তি ১ টাকা জরিমানা।  প্রশান্ত ভূষণের আদালত অবমাননা মামলায় সোমবার এই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জরিমানা হিসেবে এই এক টাকা দিতে হবে প্রশান্ত ভূষণকে। জরিমানার অর্থ দিতে ব্যর্থ হলে তিন মাসের কারাদণ্ড হবে অথবা তিন বছরের জন্য তিনি আইনজীবী হিসেবে কোনও মামলায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘‘বাক স্বাধীনতার অধিকার খর্ব করা যায় না।’’
তাঁর দুটি টুইটের জেরে গত ১৪ অগস্ট তাঁকে আদালত অবমাননায় দোষী সাব্যস্ত করে শীর্ষ আদালত। ২১ তারিখ তাঁর শাস্তি ঘোষণার কথা থাকলেও ২০ অগস্ট তাঁকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়। সেই শুনানিতে বিচারপতিদের বক্তব্য ছিল, সম্পূর্ণ বাক স্বাধীনতার অধিকার বলে কিছু হতে পারে না। তাঁরা বলেছিলেন, ‘‘আপনি শত শত ভাল কাজ করতে পারেন। কিন্তু সেটা আপনাকে ১০টা খুনের লাইসেন্স দিতে পারে না।’’
কিন্তু তার পরেও ক্ষমা চাইতে রাজি হননি ৬৩ বছরের আইনজীবী। বরং বলেছিলেন, ক্ষমা চাইলে সেটা হবে তাঁর বিবেকের কাছে অবমাননা। তবে আদালত যে শাস্তি দেবে, তা তিনি মাথা পেতে নেবেন। প্রশান্তের আইনজীবী রাজী ধবনও আদালতে জানান, প্রশান্ত ভূষণের টুইটে আদালতের অবমাননা হয়নি বা বিচারব্যবস্থার অমর্যাদা করা হয়নি। তার পর আজ সোমবার সেই মামলায় রায় দিল সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ।প্রশান্ত ভূষণের দুটি টুইট ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত। একটি দামি ব্র্যান্ডের বাইকে চড়া অবস্থায় প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদের একটি ছবি প্রকাশ্যে আসে। কিন্তু বোবদের মাথায় হেলমেট বা মুখে মাস্ক ছিল না। সেই নিয়েই প্রশান্ত ভূষণ টুইটে প্রশ্ন তুলেছিলেন, প্রধান বিচারপতি হেলমেট এবং মাস্ক পরেননি কেন? কিন্তু ওই বাইকটি দাঁড় করানো ছিল। ফলে হেলমেট পরার প্রশ্ন ছিল না। পরে এই বিষয়টি সামনে আসায় টুইটের প্রথম অংশের বক্তব্য থেকে তিনি সরে আসেন। তবে মাস্ক না পরা নিয়ে নিজের অবস্থান বদলাননি। অন্য দিকে দ্বিতীয় একটি টুইটে তিনি বর্তমান এবং অবসরপ্রাপ্ত মিলিয়ে মোট চার বিচারপতির সমালোচনা করেন। তিনি লিখেছিলেন, দেশের শেষ চার প্রধান বিচারপতি গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন।
এই দুই টুইটের জেরেই বর্ষীয়ান এই আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়। ১৪ অগস্ট তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। তার পর ২০ অগস্ট সাজা নিয়ে শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেণুগোপাল আদালতে বলেন, প্রশান্ত ভূষণকে সাবধান করে ছেড়ে দেওয়া হোক। তাঁর যুক্তি ছিল, ‘‘বিচারব্যবস্থার প্রশাসনিক উন্নতির জন্য এই ধরনের টুইট করেছেন প্রশান্ত। তিনি তাঁর বাক স্বাধীনতার অধিকারে এই কথা বলেছেন এবং এই মামলাতেও সেই গণতান্ত্রিক অধিকারকে অনুসরণ করুক আদালত। আর সেটা করলে আদালত উচ্চ প্রসংশিত হবে।’’
এ দিন রায় দিতে গিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের ওই সওয়ালকে সুস্থ উপদেশ বলেও উল্লেখ করেছেন বিচারপতিরা। বিচারপতি অরুণ মিশ্র ছাড়াও বেঞ্চের সদস্য ছিলেন বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারি। তবে রায় দেওয়ার সময় বিচারপতিরা এও বলেছেন যে, ‘‘বাক স্বাধীনতার অধিকার থাকবে। কিন্তু সেই সঙ্গে অন্যদের অধিকারকেও সম্মান করতে হবে।’’

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ