
ডেস্কও ওয়েব ডেস্কঃ মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স কত হওয়া
উচিত, তা পুনর্বিবেচনা করে দেখছে কেন্দ্রীয় সরকার। শনিবার লালকেল্লা থেকে স্বাধীনতা
দিবসের ভাষণে এমনটাই জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানিয়েছেন, বিষয়টি
নিয়ে দেশ জুড়ে সমীক্ষা শুরু হয়েছে। গঠন করা হয়েছে একটি কমিটিও। তাদের সুপারিশ মেনেই
চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্র।
বর্তমানে ভারতে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে তা ২১ বছর।
কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখতে পারে বলে বেশ কিছু দিন ধরেই জল্পনা
চলছিল। মানসিক ভাবে প্রস্তুত হওয়ার আগেই অনেক সময় বিয়ে এবং মাতৃত্বের গুরুদায়িত্ব চাপিয়ে
দেওয়া হয় মেয়েদের উপর। এটা মা ও সন্তান দু’জনের স্বাস্থ্যের
জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। আলোচনায় উঠে আসছিল এ সব বিষয়ও। তাই বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখার
চিন্তাভাবনা করছিল মোদী সরকার। এ দিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স পুনর্বিবেচনা করে দেখতে একটি কমিটি গঠন করেছি আমরা।
বিষয়টি নিয়ে দেশে সমীক্ষাও শুরু হয়েছে। সব কিছু খতিয়ে দেখে ওই কমিটি রিপোর্ট জমা দিলেই,
এ ব্যাপারে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
গত জুন মাসে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রক একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন
করে। যার নেতৃত্বে সমতা পার্টির প্রাক্তন সভাপতি জয়া জেটলি। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে কেন্দ্রের
কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল ওই কমিটির। তবে এখনও পর্যন্ত সেই রিপোর্ট জমা পড়েনি।
বিয়ের জন্য নতুন বয়ঃসীমা কত হতে পারে, সে ব্যাপারেও কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। ২০২০ সালের
বাজেট পেশের সময় মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়ঃসীমা বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেছিলেন কেন্দ্রীয়
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনও। মাতৃত্বকালীন মৃত্যুর হার কমাতে মেয়েদের বিয়ের সঠিক
বয়স কত হওয়া উচিত, তা নির্ধারণ করার জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করার কথা বলেন তিনি।
তার আগে যদিও ২০১৮ সালে একই প্রস্তাব দিয়েছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। তাদের যুক্তি
ছিল, বিয়ের ক্ষেত্রে নারী এবং পুরুষের বয়ঃসীমা অভিন্ন হওয়া উচিত। বিয়ের ন্যূনতম বয়স
কত হওয়া উচিত, তা নিয়ে যদিও কোনও সুপারিশ করেনি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। তবে ওই একই
বছর আইন কমিশনের তরফে বলা হয়, সব ধর্মেই নারী-পুরুষের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ হওয়া উচিত।
তার পরই এ দিন মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স পুনর্বিবেচনা করে দেখার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র মোদী।
এর পাশাপাশি, দেশের ৭৪তম স্বাধীনতা দিবসে দেশের নারীশক্তিকে সম্মান জানান প্রধানমন্ত্রী।
চাকরি ক্ষেত্রে মহিলাদের সমান সুযোগ দিতে তাঁর সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ বলেও জানান তিনি।
মোদী বলেন, ‘‘কয়লাখনিতে কাজ করা হোক বা যুদ্ধবিমান চালানো, সব ক্ষেত্রেই আজ পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে
কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছেন মহিলারা। দেশে যে ৪০ কোটি জনধন অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তার মধ্যে
২২ কোটি অ্যাকাউন্টই মহিলাদের।’’
করোনা সঙ্কটে এপ্রিল-মে-জুন মাসে, মহিলাদের অ্যাকাউন্টে সরকার ৩০ হাজার কোটি টাকা
জমা করেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তাঁর সরকার দেশের ৫ কোটি মেয়েদের হাতে
১ টাকার বিনিময়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন তুলে দিয়েছে বলেও জানান মোদী।

0 মন্তব্যসমূহ