
ডেস্কও ওয়েব ডেস্কঃ করোনার প্রকোপের জেরে প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনীতিতে। এখনো দেশের বহু শিল্প,
কারখানা বন্ধ হয়ে রয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের
জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের ঘোষণা দেন।
এই আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের অঙ্গ হিসাবে সোমবার ক্ষুদ্র,
লঘু ও মধ্যম উদ্যোগ এবং ব্যবসার জন্য ঋণ দান শিবির
অনুষ্ঠিত হয়। শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের উদ্যোগে রাজধানীর রবীন্দ্র ভবনে এই ঋণ দান
শিবির অনুষ্ঠিত হয়। শিবিরের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
এইদিনের ঋণ দান শিবিরের সূচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী
হিসাবে যতদিন বিপ্লব দেব থাকবেন ততদিন সবকিছুতে স্বচ্ছতা থাকবে। স্বচ্ছ নিয়োগ নীতি,
স্বচ্ছ বিজনেস নীতি, স্বচ্ছতার জন্য সিঙ্গেল উইনডো সিস্টেম চালু করা হয়েছে। কোন
উদ্যোগপতি যেন ৩০ দিনের মধ্যে লাইসেন্স পেতে পারে তার জন্য তা করা হয়েছে। ৩০ দিনের
মধ্যে লাইসেন্স না পেলে সেই উদ্যোগপতি নিজের থেকে কাজ শুরু করে দিতে পারেন বলেন
জানান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
করোনা পরিস্থিতিতে বিরোধীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে গরীব পরিবার গুলিকে নগদ
অর্থ প্রদানের। সেই বিষয়ে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন সরকার জনগণের জন্য। যা
থাকবে সবটাই জনতার। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার মিলে ত্রিপুরাতে বহু স্কিম পৌঁছে
দিয়েছে। তার জন্য সরকার কোন প্রচার করেনি বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন কিষান সম্মাননিধি প্রকল্পে যাদের নাম রয়েছে তারা দুই হাজার টাকা
করে পেয়েছে। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে যারা ভাতা পাচ্ছে তাদের এক সাথে ২ হাজার টাকা
করে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। জুমিয়া পরিবার গুলিকে ১ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। জনধন
একাউন্টে তিন মাস পর্যন্ত প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের
ভাতা প্রাপক রাজ্যে ৮ লক্ষের অধিক রয়েছে। তাদেরকে ভাতার সাথে প্রতি মাসে ১ হাজার
টাকা করে তিন মাস পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে। ফুল চাষিদের মুখ্যমন্ত্রী ত্রান তহবিল থেকে
২ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকদেরও মুখ্যমন্ত্রী ত্রান তহবিল
থেকে ১ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। ৫০ হাজার এপিএল পরিবারকে চিহ্নিত করে
মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিল থেকে ১ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। পিছিয়ে পড়া ১২ টি
ব্লকের ৯৩ হাজার জব কার্ড হোল্ডারকে ৫০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। চাকুরি চ্যুত ১০৩২৩
জন শিক্ষক শিক্ষিকাকে মাথাপিছু ৩৫ হাজার টাকা করে দয়া হয়েছে। এই সরকার জনতার
সরকার। এই সরকার স্বচ্ছ সরকার বলেও দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
এইদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষ সরাসরি যে টাকা পেয়েছে,
তা কোনদিন পার্টি অফিসে না গিয়ে পেয়ে যাবে ত্রিপুরার
মানুষ কল্পনাই করতে পারে নি। পূর্বতন সরকার মানুষকে জনধন একাউন্ট করতে দিত না।
কারন তারা জানতো সাধারন মানুষের জনধন একাউন্ট হয়ে গেলে আর দুর্নীতি করা যাবে না।
ই-পিডিএস সিস্টেমের বিরোধ করেছিল তারা। কারন তাদের লক্ষ্য ছিল গরীবের কাছে স্বচ্ছ
পদ্ধতি না পৌঁছে দেওয়ার। রাজ্যে ১০০ শতাংশ ই-পিডিএস সিস্টেম চালু হয়ে যাওয়ার ফলে
এই করোনা পরিস্থিতিতে রেশন সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলেও জানান
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। ই-পিডিএস সিস্টেম চালু করার ফলে রেশন কার্ড বন্দক
দেওয়া বন্ধ হয়েছে। কারন রেশন কার্ড বন্ধক নিলে কিছুই হয়না। ই-পিডিএস সিস্টেম চালু
হয়ে যাওয়ার ফলে যে কোন রেশন সপ থেকে আধার কার্ড সাথে নিয়ে রেশন সামগ্রী তুলে নিতে
পারবে। এক দেশ এক রেশন কার্ড চালু হয়ে গেছে। ভারত অনেক এগিয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে নতুন দিশাতে চলছে ভারত।
এইদিনের ঋণ প্রদান শিবিরে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন
খাদি বোর্ডের চেয়ারম্যান রাজীব ভট্টাচার্য, শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান টিঙ্কু রায়,
চা উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান সন্তোষ সাহা সহ
অন্যান্যরা। এইদিন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিরা বেশ কয়েকজন ঋণ গ্রহিতার হাতে
ঋণের টাকার চেক তুলে দেন।

0 মন্তব্যসমূহ