
ডেস্কও ওয়েব ডেস্কঃ কোভিড-১৯ এর কারণে সমাজের দুর্বল অংশের মানুষের জীবন যাত্রা অব্যাহত রাখতে
এবং লকডাউন সময়কালে যাতে সমাজের দুর্বল অংশের মানুষের জীবন যাত্রা প্রভাবিত না হয়
তা নিশ্চিত করতে গত ২৬শে মার্চ ২০২০ইং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী শ্রীমতিঃ নির্মলা সিথারমন
প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ প্যাকেজ (পিএমজিকেপি)ঘোষণা করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ প্যাকেজের অংশ হিসাবে, সরকার প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা সুবিধাভোগীদের
বিনামূল্যে তিন মাসে তিনটি গ্যাস সিলিন্ডার প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন। প্যাকেজটির
দ্রুত বাস্তবায়ন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ করছে। অর্থ মন্ত্রী,
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়, মন্ত্রীপরিষদ সচিবালয় এবং পিএমও এই ত্রাণ ব্যবস্থাটি দ্রুত
এবং লকডাউনের অভিপ্রায় অনুসারে অভাবীদের পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কোন প্রকার
প্রচেষ্টা ছাড়ছেন না। ত্রিপুরা রাজ্য সরকারও প্রকল্প সঠিক ভাবে বাস্তবায়নের লক্ষে
নির্দেশিকা জারি করেছেন।
এরই অঙ্গ হিসেবে উত্তর ত্রিপুরা জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রকল্প বাস্তবায়নের
লক্ষে গ্রাম পঞ্চায়েত গুলি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। সেই অনুসারে উত্তর ত্রিপুরা জেলার
যুবরাজনগর ব্লক এলাকায় গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের মধ্যে বিনামূল্যে
গ্যাস সিলিন্ডার বিতরণের কাজ শুরু হয়।
প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষে গত ২৯শে এপ্রিল, ২০২০ইং যুবরাজনগর আরডি ব্লকের অন্তর্গত শ্রীপুর গ্রাম
পঞ্চায়েতের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের মধ্যে গ্যাস সিলিন্ডার বিতরণ করা হয়।
![]() | |
শ্রীঃ সঞ্জয় ভৌমিক, প্রধান, শ্রীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। |
ঐ দিন শ্রীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের মধ্যে গ্যাস সিলিন্ডার
বিতরণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। বিশ্বস্ত সূত্রে প্রকাশ পায় যে,
গ্যাস সিলিন্ডারের বর্তমান বাজার মূল্য ৯১৮টাকা প্রতি
সিলিন্ডারের পরিবর্তে গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ৯৫০টাকা প্রতি সিলিন্ডার সংগ্রহ
করেছেন। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই এলাকার একজন সমাজসেবী শ্রী: গোপীকা কান্ত দত্ত (জিকে
দত্ত) শ্রীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের ফেসবুক পোষ্টে কমেন্ট করে বিষয়টি দেখার
জন্য অনুরোধ করেন।

শ্রী: গোপীকা কান্ত দত্ত (জিকে দত্ত) শ্রীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের ফেসবুক
পোষ্টে কমেন্ট করার পর, শ্রীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সচিব মনতোষ রায় এর উওরে কমেন্ট করতে গিয়ে
স্বীকার করেন যে উনারা সুবিধাভোগীর কাছ থেকে ৯৫০ টাকা প্রতি সিলিন্ডার সংগ্রহ
করেছেন। এবং উনার দ্বারা করা এই আর্থিক দুর্নীতি সমর্থন করতে গিয়ে এমনসব উদ্ভট এবং
বিভ্রান্তিকর কমেন্ট করেন যার সাথে সরকারি নির্দেশের কোন যোগসূত্র নেই।

এমনকি উনি বিগত ১২ এপ্রিল ২০২০ইং ত্রিপুরা সরকারের খাদ্য,
জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তর কর্তৃক জারি
করা নির্দেশিকাও মানতে নারাজ।

শ্রীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সচিব মনতোষ রায় এর উওরে কমেন্ট করতে গিয়ে
আরও প্রকাশ করেন যে কেবল শ্রীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতেই নয়, হাফলং, দেওয়ানপাশা এবং
পশ্চিম দেওয়ানপাশা গ্রাম পঞ্চায়েতেও সুবিধাভোগীর কাছ থেকে ৯৫০ টাকা প্রতি
সিলিন্ডার সংগ্রহ করা হয়েছে। এবং ধর্মনগর শহরের দুটি গ্যাস এজেন্সিতেও নাকি ৯৫০
টাকা প্রতি সিলিন্ডার সংগ্রহ করা হয়।

দুর্নীতির এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই এলাকার সমাজসেবী শ্রীঃ গোপিকা কান্ত
দত্ত বিষয়টি নিয়ে সরব হন এবং ৩০শে এপ্রিল ২০২০ইং সমষ্টী উন্নয়ন আধিকারিক, যুবজননগর
আরডি ব্লক এবং জেলা শাসক, উত্তর ত্রিপুরা জেলার নিকট প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের
জন্য লিখিতভাবে অভিযোগ দাঁয়ের করেন।
Corruption in the distribution of free gas cylinders to the beneficiaries of #UjjwalaYojana in #JubarajnagarRDBlock@tripura_cmo @mygovtripura @BjpBiplab @BJP4Tripura @TNT_Magazine @NENowNews @NorthEastToday pic.twitter.com/eB87y7FJzH— GK Dutta (@gkduttaindia) April 30, 2020
উনি আবেদনের মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থ ফেরত করার দাবি জানা। তৎসঙ্গে সংশ্লিষ্ট
গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে গরীব জনগণের
স্বার্থ রক্ষার অনুরোধ করেন।
যদিও হাফলং, দেওয়ানপাশা এবং
পশ্চিম দেওয়ানপাশা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান শ্রীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সচিব মনতোষ রায়
এর দ্বারা উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে জানান যে তার সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে কোন
রকমের কোন অর্থ সংগ্রহ করেন নি। যাবতীয় লেনদেন গ্যাস এজেন্সি কর্তৃপক্ষের মাধ্যমেই
হয়েছে এবং তাঁরা এই ব্যাপারে কোন কিছুই জানেন না।
এখন দেখার বিষয়
যুবরাজনগর আরডি ব্লকের বিডিও এবং জেলা শাসক, শ্রীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দুর্নীতি গ্রস্ত পঞ্চায়েত সচিব মনতোষ রায় যিনি
নিজেই ফেসবুকে দুর্নীতি স্বীকার করেছেন এবং গ্যাস এজেন্সির বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ
গ্রহণ করেন।

0 মন্তব্যসমূহ