
ডেস্কও ওয়েব ডেস্কঃ সীমান্ত নিয়ে ভারতের সঙ্গে বিরোধ ছিল নেপালের। কিন্তু এবার সেই বিরোধিতায় যেন
সরকারি সিলমোহর দিল নেপাল সরকার। ভারত-নেপাল সীমান্তের আঞ্চলিক এলাকাকে নতুন
মানচিত্রে রাখার বিষয়ে সংবিধান মোতাবেক একটি সংশোধনী বিল আনার কথা ছিল সে দেশের
সরকারের, কিন্তু আপাতত
সেই বিল পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেই খবর। এদিকে ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকাকে ম্যাপে
সংযোজন করা নিয়ে সুর চড়িয়েছে দিল্লিও।
জানা গিয়েছে, বুধবার নেপালের
প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির সরকার শাসকদলের মধ্যে মতবিরোধের কারণে এবং প্রধান
বিরোধী দল এ বিষয়ে সময় চাওয়ার কারণে নেপালের সংসদে এই বিল উপস্থাপন করতে ব্যর্থ
হন। তবে এ বিষয়ে চিন্তার মেঘ দেখছে দিল্লি। সরকারি সূত্রের মতে এখন নেপালের দক্ষিণ
ব্লকে যে উন্নয়নগুলি চলছে সেখানে “সাবধানতা অবলম্বন”
করা হচ্ছে। কিন্তু এই বিল স্থগিত হওয়ায় বৃহত্তর
বিতর্কেও সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ২০ মে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ
শ্রীবাস্তব বলেন, “নেপাল সরকার নেপালের একটি সংশোধিত সরকারী মানচিত্র প্রকাশ
করেছে যার মধ্যে ভারতীয় ভূখণ্ডের কিছু অংশ রয়েছে। ঐতিহাসিক তথ্য এবং প্রমাণ না
মেনেই এই একতরফা আইন তৈরি করা হয়েছে। এ জাতীয় সীমান্ত সম্প্রসারণ ভারত মেনে নেবে
না।”

দিল্লির এক সরকারি সূত্র মতে, “সীমান্তের সমস্যা সবসময়ই অত্যন্ত
সংবেদনশীল হয়ে থাকে। পারস্পরিক আস্থা এবং আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে এর সমাধানের
প্রয়োজন হয়। আমরা লক্ষ করছি যে নেপালে এই বিষয়টি নিয়ে একটি বৃহত্তর বিতর্কের
সৃষ্টি হয়েছে।” প্রসঙ্গত, মানস সরোবর যাত্রার
জন্য উত্তরাখণ্ডের ধারছুলা থেকে লিপুলেখ পর্যন্ত ভারত ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা
বানানোর পর তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি
সরকার। এরপর সেই এলাকাগুলিকে নিজেদের মানচিত্রে রেখে তড়িঘড়ি একটি নতুন মানচিত্র
প্রকাশও করে ফেলে ওলি সরকার। ভারতীয় ভূ-খণ্ডের লিমপিয়াধুর, লিপুলেখ এবং কালাপানিকে নেপালের মানচিত্র দেখিয়েছেওলি
প্রশাসন। যদিও ভারতের পক্ষ থেকে জানান হয় যে সেই এলাকা ভারতের মধ্যস্ত।
কিন্তু নয়া মানচিত্র নিয়ে নেপালের সংসদে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যেই ঐক্যমত গড়ে
ওঠেনি। সংসদের ছাড়পত্র জোগাড়ের চেষ্টা করলেও ধাক্কা খান নেপালের প্রধানমন্ত্রী।
নিয়মানুসারে, একটি সংবিধান
সংশোধনীর জন্য দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট প্রয়োজন। কিন্তু ন’জন সাংসদ কম
ভোট দিয়েছেন এই মানচিত্রের পক্ষে। এরপর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কামাল দহলের
নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন জোটের একাংশ প্রধানমন্ত্রী ওলিকে এই বিষয়ে মন্থর হওয়ার
পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ওলি জানিয়েছেন এই মুহুর্তে বিল-এ
স্থগিতাদেশ দেওয়া হলেও তা বাতিল করা হয়নি।

0 মন্তব্যসমূহ