
ডেস্কও ব্যুরোঃ কোভিড-১৯ সংক্রান্ত চিকিৎসার ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখতে
বৃহস্পতিবার রজধানির জিবি ও আইজিএম হাসপাতাল পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। ফোনে কথা
বলেন জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত মহিলার সাথে। তার অবস্থা স্থিতিশীল
বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।কোভিড-১৯ নিয়ে মহাকরণে উচ্চ পর্যায়ের
বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বুধবার স্টেট টাস্ক ফোর্সের উচ্চ পর্যায়ের আধিকারিকরা এই
বৈঠকে কোভিড-১৯ নিয়ে রাজ্যের ব্যবস্থাপনা তুলে ধরেন। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী
বিপ্লব কুমার দেব রাজধানীর জিবি হাসপাতালে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত চিকিৎসার
ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখেন। জিবি হাসপাতালে মুখ্য সচিব, স্বাস্থ্য কর্মী, চিকিৎসক, এম এস,
স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিক ও বিভিন্ন দপ্তরের
আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন। ঘুরে দেখেন ব্যবস্থাপনা। করোনা সম্পর্কে প্রদেয়
নির্দেশাবলী মেনে চলার জন্য ফের একবার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের সাথে যুক্ত ২২ লক্ষের উপর
কর্মচারীদের বড় অঙ্কের ইন্সুরেন্সের আওতায় আনা হয়েছে। এর জন্য অর্থ দিচ্ছে
কেন্দ্রীয় সরকার। করোনা আক্রান্ত হয়ে জে কোন ব্যক্তি বা স্বাস্থ্য কর্মী প্রয়াত
হলে চার লক্ষ টাকা করে পরিবারকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। গত ২১ মার্চ
এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেয় সরকার। করোনার জন্য কোন স্বাস্থ্য কর্মী বা চিকিৎসকের
প্রয়াণ ঘটলে তার পরিবারের সদস্যকে চাকুরি দেবে রাজ্য সরকার। এর জন্য সরকার পিছ পা
হবে না। এই সমস্ত বিষয় ঘোষিত। ত্রিপুরাতে ৮০ শতাংশ লোক বিপিএল ও প্রায়োরিটি হাউজ
হোল্ড রয়েছে। গরিবদের জন্য সরাসরি একাউন্টে টাকা প্রদান করা হচ্ছে। দুই হাজার টাকা
কিষান সম্মান নিধির মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে। ৫০০ টাকা দেওয়া হচ্ছে জনধন একাউন্টের
মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে। ৫০০ টাকা পিছিয়ে পড়া ১২ টি ব্লকের বাসিন্দাদের মধ্যে দেওয়া
হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিল থেকে। ১ হাজার টাকা করে পোঁনে ২ লক্ষের কাছাকাছি,
যারা কেন্দ্রীয় ভাতা পান তাদের দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য
সরকার দুই মাসের ভাতা এক সাথে দিচ্ছে। একই সঙ্গে বিনামূল্যে দিচ্ছে খাদ্য। ৮ হাজার
৬৬৬ জন হকারকে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিল থেকে ১ হাজার টাকা করে প্রদান করা হবে।
এতে ব্যয় হবে প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা। বর্তমান পরিস্থিতিতে সমস্ত ব্যবস্থা করেছে রাজ্য
সরকার। রাজ্যের প্রতিটি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার। এই অবস্থায় কেউ যেন আতঙ্ক
না ছড়ায় তার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করে
রাজ্য বাসি জয়ী হবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন তিনি।

জিবি হাসপাতালের কিছু সেবিকা জেভাবে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে,
তারজন্য সরকার করা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। হাসপাতাল
চলানোর জন্য সেবিকা রাখা হয়নি। এর জন্য এমএস ও স্বাস্থ্য দপ্তর রয়েছে। সরকারী
চাকুরি করার সময় সংবাদ মাধ্যমের সামনে এসে বলার অধিকার কেবল সচিব ও আধিকারিকদের
রয়েছে। এই বিষয়ে নির্দেশিকা রয়েছে সরকারের। জিবিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে PPE,
গ্লাভস, হ্যান্ড সেনিটাইজার ও মাস্ক রয়েছে। এই ভাবে সংবাদ মাধ্যমের সামনে বলে মানুষের
মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা, সরকার তাদের বিরুদ্ধে করা ব্যবস্থা নেবে। সকলকে এই পরিস্থিতিতে একহয়ে কাজ করতে
হবে। বিভ্রান্তি ছড়ালে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব
কুমার দেব ।
জিবি হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব যান রাজধানীর আইজিএম
হাসপাতালে। সেখানে করোনা মোকাবেলার ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন তিনি। নতুন করে আই.সি.ইউ তৈরি করার কাজের অগ্রগতি ও
ভিন্টিলেশন যন্ত্রের প্রতিস্থাপনের বিষয়টিও খতিয়ে দেখেন। কথা বলেন স্বাস্থ্য কর্মী
ও চিকিৎসকদের সাথে। মুখ্যমন্ত্রী জানান কোভিড-১৯-এর কোন রোগী এলে তাকে প্রাথমিক
ভাবে আইজিএম হাসপাতালে রাখা হবে। জরুরি কালীন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে আইজিএম
হাসপাতালে। জিবিতে পুরোদমে কোভিড-১৯ পরিষেবা শুরু করা হয়েছে। অন্যদিকে আইজিএম
হাসপাতালে প্রাথমিক ভাবে যাদের শনাক্ত করা হবে তাদের রাখা হবে।পজেটিভ রোগীদেরকেই
একমাত্র জিবিতে রাখা হবে। সমস্ত ব্যবস্থাপনা প্রায় প্রস্তুত। সর্বদা বিদ্যুৎ
পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার উপর জোর দেন তিনি। ৯৯ শতাংশ কাজ সম্পন্ন। রাজ্য সরকার
করোনা সম্পর্কিত সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কোভিড-১৯-এর মোকাবেলা করার জন্য
রাজ্য সরকার পুরো দমে প্রস্তুত বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
প্রতিটি জেলায় করোনা ভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এইদিন মুখ্যমন্ত্রী
জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত মহিলার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। আক্রান্ত
মহিলা জানিয়েছেন তিনি ভালো আছেন। সময় মতো পাচ্ছে খাদ্য। তার রিপোর্ট ভালো বলে
জানান মুখ্যমন্ত্রী। খুব কম সময়ের মধ্যে করোনা আক্রান্ত মহিলা সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে
আশা ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী।

0 মন্তব্যসমূহ