About Me

header ads

করোনা আক্রান্তের দেহে প্লাজমা পরীক্ষার ফল আশাপ্রদ: কেজরিওয়াল


ডেস্কও ব্যুরোঃ দেশে দাপট দেখাচ্ছে করোনা, দিল্লিতেও ঊর্ধ্বমুখী কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। সেই পরিস্থিতিতে আশার কথা শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গলায়। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা লোক নায়েক হাসপাতালে সংকটজনক অবস্থায় আছেন এমন খুব কম সংখ্যক রোগীর উপর প্লাজমা পরীক্ষা করেছিলাম। তবে পরীক্ষার ফল যা এসেছে তা যথেষ্ট আশাপ্রদ।
এদিন সাংবাদিক বৈঠক থেকে যে সমস্ত রোগীরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং সম্পূর্ণ করোনা মুক্ত তাঁদেরকে প্লাজমাদান করার আর্জি জানান আম আদমি পার্টি প্রধান। কেজরি বলেন, আমরা আপনাদের ফোন করব এবং অনুরোধ করব যে অন্যর জীবন বাঁচানোর জন্য আপনারা যদি প্লাজমা দান করেন। হাসপাতালে আসা এবং বাড়ি ফেরার সব ব্যবস্থা আমরাই করে দেব।
করোনা আবহে যেখানে বিকল্প ওষুধের খোঁজ চলছে বিশ্বে সেখানে প্লাজমা টেস্টের মাধ্যমে সত্যি কি করোনা প্রতিরোধ সম্ভব? দিল্লিতে কেজরিওয়ালের সাংবাদিক বৈঠক থেকে ডা: এসকে সারিন (যিনি দিল্লির কোভিড-১৯ মোকাবিলার টাস্কফোর্স চালনা করছেন) বলেন যে এই থেরাপিটি প্রথম ১৯০১ সালে ডিপথেরিয়ায় আক্রান্তদের উপর করা হয়েছিল।

কীভাবে করা হচ্ছে এই প্লাজমা টেস্ট?
ডাঃ সারিন বলেন, আমাদের প্রথম পরিকল্পনা হল যারা এই মুহুর্তে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় রয়েছেন তাঁদেরকে প্লাজমা থেরাপি দেওয়া। আমরা ভাইরাসকে নিউট্রিলাইজ করার জন্য এই প্রক্রিয়া ব্যবহার করছি।কারন এই ভাইরাসের প্রতিষেধক কোনও ওষুধ নেই। এই রোগটি মূলত তিনটি ধাপে হচ্ছে। প্রথমে ভাইরাস দশা, যেখানে ভাইরাস দেহে প্রবেশ করছে এবং দেহের বিভিন্ন অঙ্গে ঢুকছে। দ্বিতীয় হল পালমোনারী দশা, যেখানে ফুসফুসকে আক্রমণ করছে ভাইরাসটি। ফলে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা শুরু হচ্ছে রোগীর দেহে। তৃতীয় পর্যায়ে ভাইরাসটি দেহে সাইটোকাইনিন ক্ষরণ করছে এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নষ্ট হতে শুরু করে তখন। প্লাজমা থেরাপি সম্ভব দ্বিতীয় পর্যায়ে। তৃতীয় দশায় কিছু করার থাকে না। আর প্রাথমিক পর্যায়ে রোগটিকে নির্ণয় করা যাচ্ছে না।
লোকনায়েক হাসপাতালের ডাক্তাররা এ প্রসঙ্গে বলেন, এই মুহুর্তে বেশ কিছু প্লাজমা আমাদের কাছে রয়েছে। এই থেরাপির মাধ্যমে ভাইরাসকে দ্বিতীয় পর্যায়েই বেঁধে রাখা সম্ভব হচ্ছে। ফলে সাইটোকাইনিন ক্ষরিত হচ্ছে না দেহে। রোগীও সংকটজনক অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছেন। আগামী ১০-১৫ দিনের পর এই থেরাপিটি সম্পূর্ণ হবে। আমরা আশা করছি আশার আলো দেখাতে পারব।
তবে প্লাজমা থেরাপি ঘিরে তৈরি হয়েছে সমস্যাও। ডাঃ সারিন বলেন, আমরা তাঁদের থেকেই প্লাজমা নিতে পারব যারা করোনামুক্ত হয়েছেন তিন সপ্তাহ আগে। তাঁদের দেহে ইতিমধ্যেই করোনার বিপরীতে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়া শুরু হয়েছে। আমরা সেই সব সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি প্লাজমা দেওয়ার জন্য। কয়েকদিন আগেই একটি কমবয়সী ছেলে এসেছিলেন প্লাজমার জন্য, সারাদিন খোঁজ চললেও প্লাজমা পাওয়া যায়নি। ভোর ৪টের সময় ছেলেটি মারা যান, আর সকাল সাতটায় আমাদের হাতে আসে প্লাজমা। এর থেকে দুঃখজনক বোধহয় আর কিছু হতে পারে না।
কীভাবে নেওয়া হচ্ছে প্লাজমা? দিল্লির কোভিড মোকাবিলার টাস্ক ফোর্স প্রধান বলেন, আমরা প্রথমে রক্ত নিচ্ছি। সেখান থেকে প্লাজমা বা রক্তরসকে আলাদা করে পুনরায় রক্ত দাতার দেহে ফিরিয়ে দিচ্ছি। সেই প্লাজমা থেকে আমরা অ্যান্টিবডিকে আলাদা করে নিচ্ছি। দাতা যদি চান ১০ দিন পর এসে আবার প্লাজমা দিয়ে যেতে পারবেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ