
ডেস্কও ব্যুরোঃ লকডাউনে আজ থেকেই একশ দিনের কাজে ছাড়ের ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু,
লকডাউন শিথিলতার মধ্যে এই প্রকল্পে পয়ষট্টি বছর ও তদূর্ধ্বদের কী কাজে
লাগানো হবে? এই প্রশ্নে কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা ঘিরে বিভ্রান্তি দানা
বেঁধেছে। রাজ্য সমুহের মতে, কেন্দ্রীয় গাইড লাইনে ইঙ্গিত মিলেছে যে,
পয়ষট্টি বছর বা তার বেশি, ক্রনিক রোগ আক্রান্ত ব্যক্তি ও পাঁচ বছরের কম
বয়সী সন্তান রয়েছে এমন পুরুষ ও মহিলা শ্রমিকদের বাড়ি থেকে কাজ করতে হবে।
কেন্দ্রীয় নির্দেশে অসামঞ্জস্যতা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
করোনা আক্রান্ত ও মৃত ব্যক্তিদের বয়সীমা লক্ষ্য করলেই স্পষ্ট যে, ষাট
বছর ও তদূর্ধ্বরাই বেশি সংক্রমণের শিকার। তাই কেন্দ্র ওই বয়সী একশ দিনের
কাজের শ্রমিকদের বাড়ি থেকে কাজ করার বিষয়টির উল্লেখ করেছে বলে মনে করা
হচ্ছে। উল্লেখ্য, দেশের প্রায় ৯৩ লাখ ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি একশ দিনের কাজ
প্রকল্পে যুক্ত।
গত শুক্রবারই রাজ্যগুলোর সঙ্গে ভিডিও বৈঠক করেন গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের
সচিব রাজেশ ভূষণ। মহামারীর প্রেক্ষিতে মন্ত্রকের প্রকল্পগুলো কীভাবে
বাস্তবায়িত করা যায়, তা নিয়ে আলচনা হয়েছিল।

সূত্রের খবর, গ্রামোন্নয়ন
মন্ত্রকের বৈঠকে কেরালা ও উত্তরপ্রদেশ সরকার জানায়, পয়ষট্টি বছর ও তদূর্ধ্ব
ব্যক্তি, ক্রনিক অসুখ রয়েছে এমনসব ব্যক্তিদের এই সময়ে রাজ্য সরকার
একশদিনের প্রকল্পে যুক্ত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টি কেন্দ্রীয়
অনুমোদন জন্য আর্জি জানানো হয়। বৈঠকে সবাই সহমত হয়ে জানান, ‘এটা
চ্যালেঞ্জের সময়। এই সময় জীবন ও জীবীকার সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের বৈঠকে অংশ গ্রহণকারী এক আধিকারিক দ্য
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশিকায় স্পষ্ট হয়েছে
যে, পয়ষট্টি বছর বয়সী ব্যক্তি ও ডায়াবেটিস সহ নানা ক্রনিক রোগ থাকলে,
বাড়িতে পাঁচ বছরের কম বয়সী সন্তান রয়েছে- এমনসব শ্রমিকদের বাড়ি থেকে কাজ
করা শ্রেয়। তবে, এটা কীভাবে সম্ভব তা জানা নেই। কারণ, মনরেগার বেশিরবাগ
শ্রমিকই বয়স্ক এবং মহিলা।’ এছাড়াও কারোর ডায়াবেটিসের মত রোগ রয়েছে কিনা তা
জানা যাবেই কীভাবে তাও স্পষ্ট নয়।
মনরেগার ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুশারে
দেশে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ৭.৮৬ কোটি শ্রমিক একশ দিনের কাজ প্রকল্পের সহ্গে
যুক্ত ছিল। এর মদ্যে ৯০ লক্ষের বয়স ৬১-৮০ বছর। প্রোঢ় রয়েছেন ৩.৯ লাখ। এই
প্রকল্পের প্রায় ৬০ শতাংশের বয়স ৩০ থেকে ৫০ বছর।
গত ১৫ এপ্রিল কেন্দ্রীয় ননির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ২০ এপ্রিল থেকে করোনার
প্রভাব কম বা মুক্ত এলাকায় একশ দিনের কাজ সহ কৃষি, কৃষিজাত, প্রাণিজ
সম্পদের নানান কাজ, গ্রামীণ নির্মাণ সহ বেশ কয়েকটি লকডাউনের আওতার বাইরে
থাকবে। শ্রমিকদের মাস্ক পড়ে পারস্পারিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে হবে।
রাজ্য সরকারের আধিকারিকের দাবি, ‘সংযুক্ত (Annexure) গাইডলাইন অনুশারে,
পয়ষট্টি বছরের বেশি, ক্রমিক রোগ রয়েছে এমন ব্যক্তি ও পাঁচ বছর পর্যন্ত
সন্তানের বাবা-মায়েদের কেন্দ্র বাড়ি থেকে কাজ করতে উৎসাহিত করেছে। তবে এটা
কার্যত অবাস্তব বিষয়।’

0 মন্তব্যসমূহ