
ডেস্কও ব্যুরোঃ লকডাউনের মধ্যেও আরও বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে ছাড়ের ঘোষণা করা
হয়েছে। গ্রামীণ এলাকায়, ছোট বাজার ও লোকালয়ে এবার থেকে অনাবশ্যকীয় নির্দিষ্ট পণ্যের কিছু দোকান খোলা
থাকবে। এই মর্মেই শুক্রবার সন্ধ্যার পর নির্দেশিকার জারি করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
শপস অ্যান্ড এস্ট্যাবলিশমেন্ট অ্যাক্টের আওতায় এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে,
কোভিড কনটেইনমেন্ট অঞ্চলে এই ছাড় প্রযোজ্য হবে না।
এদিকে, ক্রমশ ভয়ঙ্কর
হচ্ছে আমেদাবাদ, সুরাট,
হায়দ্রাবাদ ও চেন্নাইয়ের পরিস্থিতি। দ্রুত হারে
ছড়াচ্ছে ভাইরাস। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এবার এই চার শহরে আন্তঃমন্ত্রক কেন্দ্রীয়
দল পাঠানোর সিদ্ধান্তের কথা জানাল মোদী সরকার।সংযোজিত গাইডলাইন অনুসারে,
শহরের মতই গ্রামীণ এলাকাতেও মল বা বড় শপিং কমপ্লেক্স
বন্ধ থাকবে। মদের দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়নি। লকডাউনের এক মাস অতিক্রান্ত। এই
পরিস্থতিতে মানুষের কাছে অনাবশ্যকীয় পণ্য পৌঁছে দিতে ও গ্রামীণ অর্থনীতি সচল
রাখতেই কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ বলে জানা গিয়েছে। তবে, পরিস্থিতি পর্যালোচনার ভিত্তিতে রাজ্যগুলিই স্থির করবে কোন
এলাকায় কিসের দোকান খোলা হবে। কেন্দ্রীয় নির্দেশিকায় উল্লেখ রয়েছে যে,
এইসব দোকানে মোট কর্মীর ৫০ শতাংশ কাজে যোগ দিতে
পারবেন ও মাস্ক-পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখা আবশ্যক।
এর আগেও পর্যায়ক্রমে একাধিক অর্থনৈতিক কাজে ছাড় দিয়েছে কেন্দ্র। কৃষির সঙ্গে
যুক্ত একাধিক কারখানা, খাদ্য
প্রক্রিয়াকরণ, বেকারি,
বইয়ের দোকান, বৈদ্যুতিন ফ্যানের দোকান প্রভৃতিকে ছাড়ের আওতায় আনা হয়েছে।

গুজরাট, তেলেঙ্গানা ও
তামিলনাড়ুর বিভিন্ন জেলা কেন্দ্রের নজরদারিতে রয়েছে। এই তিন রাজ্যের বিভিন্ন জেলা
থেকে পাঁচ হাজারের বেশি করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। কেন্দ্রীয় আন্তঃমন্ত্রক
কেন্দ্রীয় দল বাদেও একটি দল মুম্বই, পুনের পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্য রেখেছে। থানেও ক্রমে প্রশাসনের মাথাব্যাথার কারণ
হয়েছে উঠছে। তাই ওই দল থানের পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, ‘আমেদাবাদ,
সুরাট, থানে, হায়দ্রাবাদ,
চেন্নাইয়ের করোনা হটস্পট এলাকার পরিস্থিতি গুরুতর। এই
শহরগুলিতে কেন্দ্রীয় দল পরিদর্শনে যাবে ও ভাইরাস রোধ-স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে
রাজ্যগুলির সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবে।’ এর আগে
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে, পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র,
রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে কেন্দ্রীয় দল পাঠানো হয়েছিল।
পরিসংখ্যান বিচারে দেখা যাচ্ছে যে, এপ্রিল ১ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত হায়দ্রাবাদ ও চেন্নাইয়ে সংক্রমণের মাত্রা ৮-১০
গুণ বেড়েছে। একই সময়ে আমেদাবাদ ও সুরাটে ভাইরাস সংক্রমণের হার প্রায় ৪০ শতাংশ।
থানেতে বৃদ্ধির পরিমান প্রায় ২৩ শতাংশ। মুম্বাইয়ের অবস্থাও বেশ শোচনীয়।
শুক্রবার রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আমলাদের সঙ্গে ভিডিও আলোচনায় কেন্দ্রীয়
স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন দাবি করেছেন, ভারতে এখনও গোষ্ঠী সংক্রমণের পর্যায়ে পৌঁছয়নি করোনা। মোদী সরকারের নেওয়া
একাধিক পদক্ষেপের কারণে ভারতের পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে ভাল বলেও দাবি করেন তিনি।
করোনার তৃতীয় পর্যায়কে গোষ্ঠী সংক্রমণ বলা হয়। এই পর্যায়ে কোন পথে ভাইরাস হানা
দিচ্ছে, তার হদিশ পাওয়া
মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। নিম্নমানের র্যাপিড কিট নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান,
আমদানি করা প্রতিটি কিট ফেরত দেওয়া হবে। র্যাপিড কিট
কেনার টাকা এখনও দেওয়া হয়নি। তাই আর্থিক ক্ষতির প্রশ্নই নেই বলে দাবি হর্ষবর্ধনের।
নীতি আয়োগের (স্বাস্থ্য) সদস্য ডাঃ ভি কে পাল লকডাউনের কার্যকারিতার কথা তুলে
ধরেন। বলেছেন, ‘লকডাউনের জন্যই করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। না হলে
এতদিনে ধেশে এক লক্ষের উপর পজেটিভ ধরা পড়ত।’ ন্যাশনাল
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের ডিরেক্টর ডাঃ সুরজিৎ সিংয়ের দাবি,
‘বর্তমানে
ভাইরাস দ্বিগুণ হারে ছড়াতে সময় নিচ্ছে ৮.৬ দিন।’

0 মন্তব্যসমূহ