
ডেস্কও ব্যুরোঃ ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে স্বাস্থ্য কর্মী ও চিকিৎসকদের সুরক্ষার
যাবতীয় ব্যবস্থা রয়েছে । এই বিষয়ে বুধবার ফের স্পষ্ট করে দেন জেলা শাসক।
পরিচালনাগত ত্রুটির কারণে হাসপাতালে স্টোরে থাকা সামগ্রী হাসপাতালের
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সময়মতো পাচ্ছে না বলে জানান তিনি। এই বিষয়ে
দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন তিনি।
ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে স্বাস্থ্য
কর্মী ও চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিয়ে মঙ্গলবার যে অভিযোগ উঠেছিল তার তদন্তে
হাসপাতাল সুপারের বড় ধরনের গাফিলতির তথ্য বেরিয়ে এলো। মঙ্গলবার ঊনকোটি
জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী ও সাফাই কর্মীরা কর্তব্য পালন
করতে গিয়ে নিজেদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অভাব এর অভিযোগ
তুলেছিল। এ নিয়ে তারা হাসপাতাল সুপার যদু মোহন ত্রিপুরার সাথে দীর্ঘ আলাপ
আলোচনার পরও কোনো সমাধান সূত্র না বের হওয়ায় দুই ঘন্টা তারা বিক্ষোভ
প্রদর্শন করে। যদিও মানবিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে পরবর্তী সময় প্রত্যেকে
নিজের কাজে যোগ দিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করে। এব্যাপারে হাসপাতাল
সুপার যদু ত্রিপুরা সাফ জানিয়ে দেন চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের জন্য
প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রী জেলা হাসপাতালের মজুত নেই।
বিষয়টি সামনে
আসতেই ঊনকোটি জেলাশাসক রবিন্দ্র রিয়াং জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক
শরদিন্দু রিয়াংকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন। জেলাশাসকের নির্দেশে
বুধবার ঊনকোটি জেলা হাসপাতালের এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় । ওই
বৈঠকে জেলাশাসক রবিন্দ্র রিয়াং উপস্থিত ছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে
আসে যে স্বাস্থ্যকর্মী চিকিৎসকদের প্রাথমিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে যে ধরনের
সামগ্রী প্রয়োজন তার যথেষ্ট পরিমাণে মজুদ রয়েছে জেলা হাসপাতালে। তথ্য
এমনটাই বলে। নির্দিষ্ট দিনে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের কার্যালয়ে তরফ থেকে
যে ধরনের সামগ্রী পাঠানো হয়েছে পাশাপাশি জেলা হাসপাতালের পক্ষ থেকেও
বাজার থেকে কিছু সামগ্রী ক্রয় করা হয়েছিল । তা নির্দিষ্ট পরিমাণে মজুত
রয়েছে জেলা হাসপাতালের স্টোরে। বিষয়টি সামনে আসতেই চাপানউতোর শুরু হয়
হাসপাতাল সুপার, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও জেলা শাসকের মধ্যে।

এ
ব্যাপারে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শরদিন্দু রিয়াং জানিয়েছেন যে
চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে যে ধরনের ম্যাক্স , হ্যান্ডগ্লাভস ,
হ্যান্ড স্যানিটাইজার ইত্যাদির প্রয়োজন তা যথেষ্ট পরিমাণে মজুত রয়েছে
জেলা হাসপাতালে। তাছাড়া পি পি ই অর্থাৎ পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট
মজুত রয়েছে পাঁচটি । বিশেষ প্রয়োজনে ব্যবহার করা হবে। তাছাড়া দুদিনে
আরো সামগ্রী এসে পৌছবে।
জেলাশাসক মঙ্গলবারের এই পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সরাসরি মন্তব্য
না করলেও আকার ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেন যে হাসপাতাল সুপার যদু ত্রিপুরার
পরিচালনাগত ত্রুটির কারণে হাসপাতালে স্টোরে থাকা সামগ্রী হাসপাতালের
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সময়মতো পাচ্ছে না। তাছাড়া স্টোরে সঠিক কি
পর্যন্ত জিনিস আছে সে ব্যাপারে হাসপাতাল সুপারের কোনো ধারনাই নেই। ফলে
স্বাস্থ্য কর্মী ও চিকিৎসকদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
এ ব্যাপারে জেলা হাসপাতালের সুপার যদু মোহন ত্রিপুরাকে প্রশ্ন
করলে তিনি তার মঙ্গলবারের দেওয়া বক্তব্য থেকে 90 ডিগ্রি ঘুরে দাঁড়িয়ে
বলেন স্বাস্থ্য কর্মী ও চিকিৎসকরা পার্সোনাল ইকুইপমেন্টের দাবি করেছিল যা
পাঁচটি মজুত রয়েছে তাই তিনি কাউকে দেননি। করোনা সংক্রমণে সংক্রামিত
সন্দেহজনক রোগের ক্ষেত্রেই তা ব্যবহার করা হবে। এই নিয়ে অযথা বিভ্রান্তি না
ছড়াতে আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে জেলা হাসপাতালের সুপার যদু মোহন
ত্রিপুরার বক্তব্য ঘিরেও তৈরি হয়েছে জটিলতা। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে সামগ্রী
থাকার পরেও কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

0 মন্তব্যসমূহ