
ডেস্কও ব্যুরোঃ নাবালিকার স্নানের দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করতে গিয়ে হাতেনাতে
ধরা পরল এক যুবক। ঘটনা ধর্মনগর রেলওয়ে কলোনি এলাকায়। পড়ে গ্রেপ্তার করা হয়
অভিজুক্ত রেল কর্মীকে। প্রশ্ন উঠেছে এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার একাংশের চেষ্টা ঘিরে।
ধর্মনগর রেলওয়ে দপ্তরে কর্মরত
সন্তোষ কুমার নামে এক রেল কর্মচারী
রবিবার দুপুরে তার পাশের কোয়ার্টারের একটি নাবালিকার স্নানের দৃশ্য মোবাইলে
ক্যামেরা করার সময় ঐ নাবালিকা দেখতে পেয়ে তার মাকে জানায়। সঙ্গে সঙ্গে তার
পরিবারের লোকজন এলাকার অন্যান্য
প্রতিবেশীদের ঘটনাটি জানান। পাড়া প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় ঘটনাটি রেলদপ্তরের
উদ্ধতর্ন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। জানানো হয় মহিলা মোর্চার নেত্রীদের। মহিলা
মোর্চার নেত্রীসহ এলাকাবাসীরা ঐ যুবকের
কাছে থেকে তাঁর মোবাইলটি ছিনিয়ে নিলে ঘটনার আসল রহস্য প্রকাশিত হয়। অভিযুক্ত যুবক
সন্তোষ কুমারের মোবাইল থেকে বেরিয়ে আসে নাবালিকা ও তার বড় বোন এমনকি তার মায়েরও
একাধিক স্নানের গোপন দৃশ্য। যদিও রবিবার এলাকাবাসী ও রেলদপ্তরের আধিকারিকদের
পরামর্শে বিষয়টি সোমবার সালিশি সভার মাধ্যমে দেখা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। এরই মাঝে
সোমবার সকাল থেকেই অভিযুক্ত রেলকর্মচারি সন্তোষ কুমার নিখোঁজ হয়ে যায়। শুরু হয় তাকে খোজাখোজি। সোমবার সকালে
উপস্থিত এলাকাবাসী ও মহিলা মোর্চার নেত্রীরা অভিযুক্তের সহকর্মীকে চাপ দিলে সে
জানায় সন্তোষ রেলওয়ে প্লেটফর্মের একটি অফিস কক্ষে লুকিয়ে আছে। এই ঘটনার বিষয়ে জানান
নাবালিকার মা।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন
বর্ণালী গোস্বামী। খবর দেওয়া হয় জি আর পুলিশকেও। জি আর পুলিশের সহযোগিতায় সন্তোষ কুমারকে বন্ধ অফিস কক্ষ থেকে উদ্ধার করা
হয়। তবে জানা গেছে এই নিকৃষ্টতম ঘটনায় অর্থাৎ অভিযুক্ত সন্তোষ কুমারের এহেন
জঘন্য অপরাধের পরেও তাকে বাঁচাতে তৎপর হয়ে পরেছিলেন রেলদপ্তরের কিছু
আধিকারিক। এমনকি এক রেলওয়ে এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সম্পাদক পরিমল দে নামে এক রেলকর্মী
ঘটনাটি দফারফা করার জন্য মোটা অঙ্কের টাকার প্রস্তাবও দেয় নাবালিকার পিতাকে।
সোমবার ঘটনা চাক্ষুষ করে রাজ্যে মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বর্ণালী গোস্বামী গোটা
ঘটনার নিন্দা প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি যে সকল ব্যাক্তি অপারাধিকে বাঁচাতে তৎপর
ছিলেন তাদের প্রতিও চরম ক্ষোভ ব্যাক্ত করেন তিনি। তিনি ধর্মনগর রেলের জিআরপি ওসির
ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এই ঘটনার খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ
সুপার, এসডিপিও সহ ধর্মনগর থানার ওসিও ছুটে যান এলাকায়। পরে সোমবার মহিলা
মোর্চার সহযোগীতায় রেলওয়ে জিআরপি থানায় অভিযুক্ত সন্তোষ কুমারের বিরুদ্ধে লিখিত মামলা দায়ের করা হয়। অভিযুক্তকে গ্রেফতার
করে পুলিশ। তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিজ্ঞ মহলে বেশ সমালোচনা হচ্ছে ঘটনাটি
সংগঠিত হবার প্রায় এক দিন অতিক্রান্ত হয়ার পর কেন লিখিত অভিযোগ জানানো হল থানায়?
যদি লকডাউনের পরিস্থিতি না থাকতো তবে হয়তো খুব সহজেই
এমন চরম অপরাধে অভিযুক্ত এক অপরাধি অনায়াসে গা ঢাকা দিতে পারতো।

0 মন্তব্যসমূহ