
সম্পূর্ণ জৈব সার তৈরি করতে এবার নয়া পদক্ষেপ মহারাষ্ট্রের। মানুষের মল
থেকেই তৈরি করা হচ্ছে বিশেষ এক প্রকার জৈব সার। সে জন্য দশ হাজার বোতলে
মানুষের মল ছ’মাস ধরে শৌচালয়ের গর্তে পচিয়ে, সাত দিন ধরে তা শুকিয়ে, চা
পাতার মতো দেখতে হলে তাকে সার হিসেবে ভরে ফেলা হচ্ছে কাচের শিশিতে।
মহারাষ্ট্রে প্রক্রিয়াকরণ করা এই জৈব সারের শিশিগুলিকেই এবার ট্রাকে করে
পাঠানো হল আহমেদাবাদের সবরমতী আশ্রমে। ২ অক্টোবর জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর
১৫০তম জন্মদিন। সেই উপলক্ষেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে খবর।
প্রতিটি ১০০
গ্রামের শিশিতে সম্পূর্ণ জৈব প্রক্রিয়ায় তৈরি করা সারগুলি নাইট্রোজেন,
ফসফরাস এবং পটাসিয়ামে পূর্ণ। শুধু তাই নয়, এরমধ্যে বীজও রোপন করা আছে। ফলে
কেবলমাত্র জল দিলেই অঙ্কুরিত হয়ে উঠবে চারাগাছগুলি। মহাত্মা গান্ধীর ১৫০তম
জন্মদিবসে সবরমতী আশ্রমে উপস্থিত অতিথিদের দেওয়ার জন্য এই সার, এমনটাই জানা
গিয়েছে। মহারাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে আখোলা জেলা পরিষদ এবং ইউনিসেফ
যৌথভাবে শৌচালয় থেকে বর্জ্যপদার্থ সংগ্রহ করে সেগুলিকে প্রক্রিয়াকরণের
মাধ্যমে এই সার তৈরির কাজটি করছে।
এই উদ্যোগের জন্য ভারত সরকারের ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ কর্মসূচীর অধীনে দেশজুড়ে নির্মিত প্রায় ১০ কোটি শৌচালয় থেকে
বর্জ্যপদার্থ সংগ্রহ করে সেগুলিকে ব্যবহার করা হয়েছে। মহারাষ্ট্র সরকারের
পক্ষ থেকে এই জৈব সারের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সোনা খাদ’। সারটির নাম ‘সোনা’
রাখার কারণ সোনার মানের মতো এর স্থায়ীত্ব হবে। ইউনিসেফের মুম্বাই শাখার জল
এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ইউসুফ কবীর বলেন, “স্বচ্ছ ভারত মিশনের দায়িত্বে
থাকা কেন্দ্রীয় সচিব পরম আইয়ার প্রথম তেলেঙ্গানার একটি গ্রামে গিয়ে
শৌচালয়ের বর্জ্য পরিষ্কার করেন। এরপরই বলিউডের বহু তারকারা এই অভিযানে
নামেন। বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কে এই বিষয়টি সম্ভব না হলেও শৌচালয়ের গর্ত
পরিষ্কার করার জন্য সাফাই কর্মীদের প্রয়োজন হয় না।”
সেপ্টেম্বরের ২১ তারিখ
প্রথম এই ধরনের বর্জ্য পদার্থের হদিশ মেলে। আখোলা জেলা পরিষদের সিইও আয়ুষ
প্রসাদ বলেন, “এই ধরনের শৌচালয় পাওয়া দুষ্কর ছিল, যেখানে এই বর্জ্য পদার্থ
পাওয়া যাতে পারে। অবশেষে এক অশীতিপর বৃদ্ধার বাড়িতে তা পাওয়া যায়। যেখানে
বহুবছর ধরে বর্জ্যপদার্থ জমা হয়ে আছে।” জানা গিয়েছে এই ‘সোনা খাদ’ এর জন্য
ব্যবহৃত কাঁচের শিশিগুলি মূলত ঘি কিংবা আচারের বোতল। সারগুলি মূলত
বিনামূল্য দেওয়া হচ্ছে, তবে মূল্য ধার্য করা হয়েছে কেবল কাঁচের জারগুলির
জন্য। ইতিমধ্যেই মোট ১০ হাজার ২৪০টি শিশি প্যাকেট করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে
সবরমতী আশ্রমে।
0 মন্তব্যসমূহ