
গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত ৬৮ সংখ্যক উত্তর পূর্ব পরিষদের সম্মেলনে ত্রিপুরার
মুখ্যমুন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বেশ কয়েকটি ইতিবাচক দিক ঘোষণা করেছেন।
বাংলাদেশের
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্রিপুরা থেকে চা-আমদানির বিষয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ
করেছেন। ত্রিপুরার চা বাংলাদেশে রপ্তানির বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী
বিপ্লব কুমার দেবের সঙ্গে হাসিনার ফোনে বার্তালাপ হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী
হাসিনাকে জানিয়েছেন, যে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা থেকে চা
আমদানি করে অথচ ত্রিপুরা থেকে দেড় ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও ঢাকা শহরে পৌঁছানো
সম্ভব। শ্রীলঙ্কা থেকে চা আমদানি করতে বাংলাদেশের অনেক খরচ হয়। কিন্তু
ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে খুব কম খরচে চা পাঠানো সম্ভব হবে। এতে
ত্রিপুরা-বাংলাদেশ উভয়ই লাভান্বিত হবে।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী
প্রস্তাবে আলোচনায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত খুশি হয়েছেন এবং
সম্মতি দান করেছেন। আগামি অক্টোবর মাসে ভারত সফরে আসছেন শেখ হাসিনা।
ত্রিপুরা রাজ্য বাংলাদেশের প্রছন্দ অনুযায়ী চা রপ্তানি করতে আগ্রহী।
প্রসঙ্গত,
ত্রিপুরা সরকারের তত্ত্বাবধানে ১৯৮০ সালে ত্রিপুরা রাজ্য চা উন্নয়ন নিগম
গঠন করা হয়। প্রায় ৪০ বছর হয়ে গেলেও ত্রিপুরার চা উন্নয়ন নিগমের কোনো লোগো
তৈরি করা হয়নি, এমনকি চা উন্নয়ন নিগমের উৎপাদিত চায়ের কোনো নামও রাখা হয়নি।
চলতি
বছরের ১৯ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাস ভবনে চা উন্নয়ন নিগমের একটি
লোগো উন্মোচন এবং চায়ের নাম দেওয়া হয়। রাজ্যে উৎপাদিত চায়ের নাম রাখা হয়েছে
‘ত্রিপুরেশ্বরী চা’।
রবিবার, সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী পূর্বের
দায়িত্বশীল সরকার থেকে রাজ্য বিজেপি সরকার যে কতটুকু উন্নতি করতে পেরেছে,
সে বিষয়ে বিশদে আলোচনা করেন।
তিনি বলেছেন, ত্রিপুরায় নতুন সরকার চেয়ারে আরোহণ করার পর মহিলাদের উপর নির্যাতনের মাত্রা ৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
দুঃখের
বিষয়, মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু এমন কথা জানাবার সাহস করেননি যে রাজ্য থেকে
সম্পূর্ণভাবে নির্যাতনের মাত্রা হ্রাস পেয়েছে। এখনো রাজ্যে গার্হস্থ্য
অত্যাচার, রাস্তা-ঘাটে ধর্ষণ, ইভটিজারের শিকার হচ্ছেন মেয়েরা।
এদিন
রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের পূর্ণ সহযোগিতায় মোট ৪৪ জন NLFT বেরী আত্মসমর্পন
করে সমাজের মূলস্রোতে ফিরে এসেছেন, সে কথাও তিনি বলেছেন।
এছাড়া, ত্রিপুরা জৈব চাষের দিক দিয়ে অনেকটাই এগিয়ে গেছে। ইতিমধ্যে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে রাজ্যে জৈব চাষ শুরু করা হয়েছে।
জৈব
চাষ ৬০০০ হেক্টর জমিতেই সীমাবদ্ধ হয়ে থাকবে না। আগামি দিনে রাজ্য সরকার ১০
হাজার হেক্টর জমিতে জৈব চাষের পূর্ণ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
ত্রিপুরায় সুস্বাদু আনারস কিন্তু জৈব উপায়েই চাষ করা হয়, এবার নতুন ভাবে এই উপায়ে মাছ চাষও শুরু করা হয়েছে।
কুইন
আনারসের জন্যে বিখ্যাত ত্রিপুরা। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব জানিয়েছেন,
মাত্র ১২ দিনের মধ্যে দুবাইয়ে মোট ৩.৫ মেট্রিক টন আনারস রপ্তানি করা হয়েছে
এবং এর ফলে রাজ্যের ৫ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা আয় হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কুইন আনারস ত্রিপুরার ‘স্টেট ফ্রুট’।
0 মন্তব্যসমূহ