ভ্রুলুণ্ঠিত স্কুল ছাত্রির সম্মান। লজ্জায় মুখ ঢাকলো তথাকথিত এই সভ্য
সমাজ।বাম আমলে দলদাসে পরিণত হওয়া নির্লজ্জ খাকি উদ্দি ধারি পুলিস ঘটনার
ধামা চাপা দিতে মরিয়া প্রয়াস চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। বাড়ির বাইরে অসুরক্ষিত নারীর সম্মান। তাহলে কি ছাত্রীরা এইবার নিরাপদে বিদ্যালয়ে যেতে পারবে না? ৩
সেপ্টেম্বর পানিসাগর থানার অন্তর্গত রৌয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম
শ্রেণীর এক ছাত্রির সাথে ঘটে যাওয়া ন্যাক্কার জনক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে
বর্তমানে বিভিন্ন মহল থেকে এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
ঘটনার বিবরণে জানা
যায় ৩ সেপ্টেম্বর রৌয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীর এক ছাত্রী টিফিন
প্রিরিয়ডে বিদ্যালয়ের অদূরে টিফিন করতে যায়। তখন এলাকার দুই বখাতে যুবক
যথাক্রমে সোয়েল উদ্দিন ও সাকিল হুসেন ঐ ছাত্রিকে জোর পূর্বক সোয়েল উদ্দিনের
দোকান ঘড়ে নিয়ে যায়। তারপর সোয়েল উদ্দিন দোকানের দরজায় বাইরে থেকে তালা
লাগিয়ে দেয়। আর দোকানের অভ্যন্তরে নাবালিকার মুখে কাপড় বেধে জোর পূর্বক
ধর্ষণ করে সাকিল হুসেন। এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করে একটি ছেলে নাবালিকার কাকাকে
ঘটনার কথা জানায়। তখন নাবালিকার কাকা সোয়েলের দোকানের সন্মুখে আসতেই সে
পালিয়ে যায়। পরে নাবালিকা কাকা সোয়েলকে ধাওয়া করে আটক করে তার কাছ থেকে
দোকানের চাবি নিয়ে আসে। এবং দোকানের দরজায় থাকা তালা খুলে নাবালিকাকে
উদ্ধার করে। ততক্ষণে নাবালিকার উপর যৌন লালসা চরিতার্থ করতে সক্ষম হয়
সাকিল।
নাবালিকার কাকা ঘটনাস্থলে আসতেই সাকিল পালিয়ে যায় বলে জানান
নির্যাতিতার মা। তিনি আরও জানান ঘটনার দিন সন্ধ্যা বেলায় তিনি পানিসাগর
থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিস লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসার কথা বলে। থানা থেকে
তিনি বাড়িতে যাওয়ার পরই এলাকার প্রভাবশালীরা সমাজদ্রোহীদের নিয়ে নাবালিকার
বাড়িতে উপস্থিত হয়। নাবালিকার পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয় থানার দ্বারস্থ হলে
পরিণতি ভালো হবে না। এমনকি নাবালিকার পরিবারকে গ্রাম ছাড়া করার হুমকিও
দেওয়া হয়েছে বলে জানান নাবালিকার মা। এইদিকে নির্যাতিতার শারীরিক অবস্থার
অবনতি ঘটায় বর্তমানে নির্যাতিতাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তারপরই
বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমের গোচরে আসে। সংবাদ মাধ্যমের দৌলতে বিষয়টি প্রকাশ্যে
আসার পর নড়ে চরে বসে পানিসাগর থানার নির্লজ্জ পুলিস বাবুরা। তরি ঘড়ি মামলা
নথীভুক্ত করে অভিযুক্তদের সন্ধ্যানে নেমেছে। তবে পানিসাগর থানার পুলিস
বাবুরা প্রথম দিকে ঘটনাটিকে যে ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে তা থানার
ওসির বক্তব্যে পরিষ্কার। তিনি সংবাদ প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাৎকারে সাফ
জানিয়ে দেন ওনার থানা এলাকায় কোন ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। সংবাদ প্রতিনিধিরা
যখন সুনির্দিষ্ট ভাবে জানায় যে ৩ সেপ্টেম্বর নির্যাতিতার মা থানায় অভিযোগ
জানাতে এসেছিল। তখন তিনি সাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করেন। নির্লজ্জের মতো
পানিসাগার থানার ওসি সংবাদ প্রতিনিধিদের জানান ৩ সেপ্টেম্বর এক মহিলা থানায়
এসেছিল কোন ধর্ষণের অভিযোগ জানাতে নয়। একটি মারপিটের বিষয়ে জানাতে
এসেছিল।
নারী গঠিত অপরাধ কমাতে সরকার একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। খোলা
হয়েছে হেল্প লাইন। যাতে করে নারীরা অতি সহজে আইনের সাহায্য নিতে পারে। আর
সেখানে এক ধর্ষিতার পরিবার থানায় গিয়ে মামলা পর্যন্ত করতে পারল না।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে পানিসাগর থানার ওসির ভুমিকা নিয়ে। প্রশ্ন উঠছে
পানিসাগর থানার ওসি অভিযুক্তদের কাছ থেকে কোন ধরনের সুযোগ সুবিধা লাভ করেন
নি তো?
ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর নড়েচড়ে বসে অখিল ভারতী
বিদ্যার্থী পরিষদ। সোমবার অখিল ভারতী বিদ্যার্থী পরিষদের পক্ষ থেকে
পানিসাগর থানায় ডেপুটেশান প্রদান করা হয় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার
করার জন্য। পাশাপাশি দাবি জানানো হয় অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির।
এইদিকে
নির্যাতিতার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় সোমবার সকালে নির্যাতিতাকে স্থানীয়
হাসপাতাল থেকে ধর্মনগরস্থিত উত্তর জেলা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
অপরদিকে এলাকার প্রভাবশালীরা প্রতিনিয়ত নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়ে হুমকি
প্রদর্শন করছে থানা থেকে মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য। নির্যাতিতার
পরিবারকে প্রান নাশেরও হুমকি দেওয়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এইদিকে ঘটনার পর ৬ দিন
অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও এখনো অধরা অভিযুক্তরা। তবে পানিসাগর থানার পুলিসের
ভুমিকা প্রথম থেকে সন্দেহ জনক। এই পরিস্থিতিতে পুলিস অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার
করতে কতটা সক্রিয় ভুমিকা পালন করবে তা নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জনমনে।
0 মন্তব্যসমূহ