
সন্ত্রাসবাদী হামলার আশঙ্কায় আতঙ্কে সিঁটিয়ে কাশ্মীর উপত্যকা। রাজ্যপাল
সত্যপাল মালিক যদিও অহেতুক আতঙ্ক ছড়াতে বারণ করেছিলেন উপত্যকাবাসীকে,
কিন্তু শনিবার থেকে স্কুল, কলেজ, হাসপাতালগুলো শুনশান হতে শুরু করেছে।
শনিবার ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি-শ্রীনগরের প্রায় সাড়ে নয়শো
পড়ুয়াকে উপত্যকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শুক্রবারই প্রতিষ্ঠানের
পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, অনির্দিষ্ট কালের জন্য পঠনপাঠন স্থগিত
থাকবে। এই প্রসঙ্গে এনআইটি শ্রীনগরের ডিরেক্টর রাকেশ সেহগাল জানিয়েছেন,
“প্রশাসন থেকেই আমাদের কাছে নির্দেশ এসেছে। আমরা নিজেরা এই সিদ্ধান্ত
নিইনি। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের সঙ্গে আমি নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি”।
অন্যদিকে ডেপুটি কমিশনার শাহিদ চৌধুরী টুইট করে জানিয়েছেন, “যে হারে
উপত্যকায় গুজব ছড়াচ্ছে, তাতে অহেতুক আতঙ্ক বাড়ছে। সমস্ত প্রতিষ্ঠানের
মাথাকেই এই সময়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কোনও প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার
নির্দেশ জারি হয়নি।
কাশ্মীরের সরকারি পলিটেকনিক কলেজের চেহারাও একই। কলেজ কর্তৃপক্ষ নোটিস জারি করে পড়ুয়াদের অবিলম্বে হোস্টেল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে।
সন্ত্রাস হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করে শুক্রবারই কার্যত নজিরবিহীন ভাবে
অমরনাথ যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। শুধু অমরনাথ যাত্রাই নয়, কাশ্মীরে মাছিল
মাতা যাত্রাও স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক
প্রশাসন। অবিলম্বে সমস্ত পর্যটককে কাশ্মীর ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই
পরিস্থিতিতে ভয়-আতঙ্কে ত্রস্ত উপত্যকাবাসী। সরকারি নির্দেশিকার পরই
ভূ-স্বর্গ ছাড়তে শুরু করেছেন পর্যটকরা। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এক সরকারি
আধিকারিক জানিয়েছেন, উপত্যকায় প্রায় ১১ হাজার পর্যটক রয়েছেন। যাঁদের মধ্যে
২০০ জনেরও বেশি বিদেশি পর্যটক রয়েছেন।
এদিকে, সরকারি নির্দেশিকার পরই
কাশ্মীরজুড়ে আতঙ্ক গ্রাস করেছে। পরিস্থিতি বেগতিক হওয়ার আশঙ্কায় পেট্রোল
পাম্প, মুদির দোকান থেকে এটিএম, সর্বত্রই মানুষের ভিড়। বিমান বাতিলের ভাড়া
মকুব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমান সংস্থাগুলি।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ জুলাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে জম্মু-কাশ্মীরে
আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ১০০ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েন করা হয়। ২৮ জুলাই রেলের
ডিভিশনাল সিকিউরিটি কমিশনারের পক্ষ থেকে আগামী ৪ মাসের জন্য রেশন মজুত
রাখতে আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের
কাশ্মীরে না আনার পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রশাসনের এই তৎপরতা দেখে জোর জল্পনা
শুরু হয়। ৩৫ এ ধারা খারিজ হতে পারে বলে জোর জল্পনা চলে রাজনৈতিক মহলে।
0 মন্তব্যসমূহ