ধর্মনগর মহিলাথানার দ্বিচারিতা প্রকাশ্যে। গোটা দিন উত্তপ্ত হয়ে রইল
ধর্মনগর থানা চত্বর। অবশেষে চাপে পড়ে পুলিশ গ্রেফতার করল ধর্মনগর লালছড়া
ঢুপিরবন্দ এলাকার মৃত গৃহবধূ সোমা দাসের স্বামী নির্মল দাসকে। গ্রেফতার করা
হল ভাশুর সমীরণ দাস ও তাঁর দুই ছেলে সুজিত দাস সুমন্ত দাসকে। তাদের
গ্রেফতারের দাবিতে ও ধর্মনগরের মহিলা পুলিশের দ্বিচারিতার অভিযোগে শুক্রবার
গোটা দিন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ধর্মনগর থানা চত্বর।
ঘটনার বিবরণে জানা যায় ।
বুধবার ধর্মনগর লাল ছড়া ঢুপির বন্ধ এলাকার বাসিন্দা নির্মল দাসের স্ত্রী
সোমা দাস ফাঁসিতে আত্মহত্যা করে। সোমা দাসের দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। মৃত
সুমা দাসকে তার পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশী কিছু লোক প্রশাসনকে না
জানিয়েই ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে। সোমা দাসের বাড়িতে খবর দেওয়া
হয় সোমা অসুস্থ বলে। ছুটে এসে তাকে মৃত দেখতে পায় তার পিতার বারির
লোকজন। পরবর্তীতে সোমার স্বামী নির্মল দাস সহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে সোমা
দাসের ভাই সঞ্জয় দাস ধর্মনগর থানায় একটি পরিকল্পিত হত্যার মামলা করেন ।
কিন্তু অভিযোগ উঠে পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্তের বদলে পক্ষপাতিত্বের ভূমিকা
নিয়েছে বলে।
অভিযোগ শুক্রবার সকালে পুলিশ সোমা দাস মামলার অভিযুক্ত তার
স্বামী ভাসুর সহ অন্যান্য অভিযুক্তদের থানায় এনে বেইলের মাধ্যমে ছেড়ে
দেবার বন্দোবস্ত করছিল। এরই মধ্যে মৃতার পরিবার থানায় সেই দৃশ্য দেখে
ক্ষোভে ফেটে পড়েন। খবর পেয়ে ধর্মনগর থানায় ছুটে আসেন মহিলা মোর্চা ও যুব
মোর্চার সদস্য সদস্যরা। তারা পুলিশের ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানান । থানায়
উপস্থিত সকলেই মহিলা থানার ওসি বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলেন।
অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। এরই মধ্যে থানা চত্বরে ছুটে আসা
উত্তপ্ত জনগণ এই ঘটনার মূল অভিযুক্তদের পুলিশের সম্মুখে আক্রমণ করার
চেষ্টাও করেন। আক্রমণ করা হয় সত্যেন্দ্র দাস নামে ঢুপির বন্ধ এলাকার এক
ব্যক্তিকে। সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ধর্মনগর থানা। থানায় উপস্থিত
উত্তর জেলা মহিলা মোর্চা সভানেত্রী মলিনা দেবনাথ এই ঘটনার নিন্দা জানান।
দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
থানা চত্বরের উত্তপ্ত
পরিবেশ সামাল দিতে থানায় ছুটে আসেন উত্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এফ
ডারলং। অবশেষে মৃতা সোমা দাসের স্বামী নির্মল দাস, ভাসুর সমীরণ দাস ও তাঁর
দুই ছেলেকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সপোর্দ করা হলে পরিবেশ কিছুটা শান্ত হয়।
তবে পুলিশ এই বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। পুলিশের সম্মুখে এভাবে আক্রমণের
ঘটনায় আবারো রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করালো। এদিকে
বিভিন্ন মহল থেকে সুষ্ট তদন্ত করে অপরাধিদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি
প্রদানের দাবি উঠেছে।
0 মন্তব্যসমূহ