
বিপদে শেষনাগ! গুয়াহাটিতে ব্রহ্মপুত্রের
জল বেড়ে বিপদসীমা অতিক্রম করায় এহেন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা
গিয়েছে। অসমে বন্যা ক্রমাগত ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করছে। ফলে ব্রম্ভপুত্রের জল
বেড়ে বিপদসীমা অতিক্রম করে গিয়েছে। যার ফলেই বিপদে শেষনাগ।
গুয়াহাটিতে বৃষ্টিপাতের পর জলস্তর
বিপদসীমা অতিক্রম করে যাওয়ায় মূর্তিটি ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
ব্রহ্মপুত্র নদীর একটি উল্লম্ব স্তম্ভে স্থাপিত শেষনাগের উপর বসে থাকা
বিষ্ণুর মূর্তিটি ডুবতে বসেছে। একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, কালিপুরের
চক্রেস্বর মন্দিরের কাছে নদীতে পিলারটির উপর জল মূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত
পৌঁছে গিয়েছে।
অন্যদিকে, অসমের মারিগাওয়ে ব্রম্ভপুত্রের
জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় তার প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে। মারিগাওয়ের তেঙ্গাগুরি
এলাকায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভেঙে পড়েছে ব্রম্ভপুত্রের জলস্তর বেড়ে
যাওয়ায়। এই দৃশ্য আবার ক্যামেরায় বন্দীও হয়েছে। শনিবার থেকে অসমে এই বন্যা
পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। অসমের রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর
(ASDMA) জানিয়েছে, রাজ্যের ২৫টি জেলা জলের তলায় চলে গেছে। বন্যা ও ভূমিধসের
কারণে ধেমাজিতে শেষ চব্বিশ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা একজন থেকে বেড়ে সাত জনে
ঠেকেছে। এএসডিএমএ অনুযায়ী, রাজ্যের ২৫টি জেলায় ১,৪০৫,৭১১ জন মানুষ এই
মহাপ্লাবনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলা প্রশাসনের তরফে
২০ হাজারেরও বেশি মানুষকে ত্রাণ শিবিরে পাঠানো হয়েছে। শনিবার এএসডিএমএ-র
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ৫১,৭২২ হেক্টর জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। যার ফলে
চরম ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে কৃষকদের।
এএসডিএমএ জানিয়েছে, এই বন্যা কবলিত
এলাকাগুলি হল, ধেমাজি, লাখিমপুর, বারপেতা, মরিগাও, বিশ্বনাথ, সনিতপুর,
দাররাং, গোয়ালপাড়া, নাগাও, গোলাঘাট, জোরহাট, শিবসাগর, ডিব্রুগড় এবং
তিনসুকিয়া। ধেমাজী ও লাখিমপুরের বন্যার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ ছিল যেখানে
বেশিরভাগ লোকই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশ কয়েকটি এলাকায় বন্যার কারণে বাঁধ
ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে কয়েকটি ঘর, সড়ক ও সেতুও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্রমাগত
বৃষ্টির ফলেই এই জলস্তর বেড়ে গিয়েছে।
অসমের বনাঞ্চল ও পরিবেশ মন্ত্রকের জনসংযোগ
আধিকারিক শইলেন পাণ্ডে জানিয়েছেন, “এই বছর বনাঞ্চল ও পরিবেশ মন্ত্রক বন্যা
পরিস্থিতির জন্য সতর্কতা অবলম্বন করছে। বারপেতায় ৫.২২ লক্ষ লোক
ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ধেমাজিতে ১.৩৮ লক্ষ এবং মারিগাওতে ৯৫,০০০ লোকক্ষতি
গ্রস্থ হয়েছে।” ৭০ শতাংশেরও বেশি পার্ক জলের তলায় চলে গিয়েছে। সমস্ত
কর্মীদের বন্যা মোকাবিলায় কিভাবে সতর্কতা অবলম্বন করা হবে তা জানানো হয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ