
প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগকারিণীর
বিরুদ্ধে ৫০ হাজার টাকা প্রতারণার অভিযোগ এনেছিলেন যে ব্যক্তি- তাঁকে
এপ্রিল মাস থেকে নিজের হরিয়ানার বাড়িতে পাওয়া যাচ্ছে না। দিল্লি আদালতে
পুলিশ এ কথা জানিয়েছে।
দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বাড়িতে যৌন হেনস্থার অভিযোগ
এনেছিলেন এক মহিলা। নিজের হলফনামায় তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে
প্রতারণার যে মামলা আনা হয়েছে তা মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মহিলার অভিযোগ
ছিল, প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার জন্যই তাঁর বিরুদ্ধে এ ধরনের
নালিশ করা হচ্ছে।
প্রতারণার অভিযোগকারী নবীন কুমারকে যে তাঁর হরিয়ানার ঠিকানায় পাওয়া
যাচ্ছে না সে কথা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মণীশ খুরানাকে ১৯ জুলাই
জানিয়েছে পুলিশ। ওই দিন নবীন কুমারকে সশরীরে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছিল।
তার আগে গত ১২ মার্চ দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ ওই মহিলার জামিন নাকচ
করার আবেদন জানিয়েছিল।
গত এপ্রিল মাসে নবীন কুমারের ঝাঝরের বাড়িতে
গিয়েছিল। তখন নবীনের মা মীনা (৫০ বছর) বলেছিলেন, তাঁর ছেলে গত ২০ এপ্রিল
সকাল ৭টার সময়ে চণ্ডীগড় চলে গিয়েছে। তার পর থেকেই তাঁর ফোন সুইচ অফ করা
রয়েছে। মীনা বলেছিলেন, তিনি ছেলেকে মামলা না দায়ের করতে বলেছিলেন। তাঁর
পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে নবীন ঝাঝরের এইচ এল সিটি প্রাইভেট
লিমিটেডের সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করতেন, বেতন ছিল ১৫ হাজার টাকা।
বুধবার সারাদিন নবীন কুমারকে আর ফোনে পাওয়া যায়নি।
গত ২৪ এপ্রিল মুখ্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নোটিস জারি করে জানান
নবীন কুমারকে ২৩ মে আদালতে সশরীরে হাজিরা দিতে বলেছিলেন। এর পর ফের হাজিরা
দিতে বলা হয় ১৯ জুলাই। কিন্তু তদন্তকারী অফিসার মুকেশ আন্টিল আদালতে জানান
নবীনকুমারকে তাঁর বাড়িতে না-পাওয়া যাওয়ায় তাঁকে নোটিস দেওয়া যানি।
আদালত ফের নবীন কুমারকে ৬ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজিরা দিতে বলেছে। একই
সঙ্গে তদন্তকারী অফিসারকে বলা হয়েছে পরবর্তী তারিখের আগে নোটিস নবীনকুমারকে
দিতে হবে।
এর বিরুদ্ধতা করেছেন মহিলার আইনজীবী ভি কে ওহরি। তিনি বলেছেন পুলিশের
আবেদন বাতিল করে তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে করা মামলা বন্ধ করা হোক। ইন্ডিয়ান
এক্সপ্রেসকে ওহরি বলেন, বিচারক জানিয়েছেন নোটিস ধরানোর শেষ সুযোগ পুলিশকে
দেওয়া হল।
আইনানুসারে তদন্তকারী সংস্থা যদি কোনও আবেদন করে বা আদালতের কোনও
নির্দেশ যদি সংশ্লিষ্ট কোনও পক্ষের বিরুদ্ধে দিতে চায়, তাহলে সে সম্পর্কিত
তথ্য অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত দু পক্ষকেই জানাতে হবে।
ওই মহিলার বিরুদ্ধে প্রতারণা, ষড়যন্ত্র সহ বিভিন্ন মামলা দায়ের হয় গত ৩
মার্চ। নবীন কুমার দিল্লির তিলক মার্গ থানায় ওই মামলা দায়ের করেন। নবীন
কুমারের অভিযোগ সুপ্রিম কোর্টে চাকরি করে দেওয়ার নাম করে ৫০ হাজার টাকা
প্রতারণা করেছিলেন ওই মহিলা।
তদন্তে নেমে গত ১০ মার্চ মহিলাকে পুলিশ গ্রেফতার এবং আদালত তাঁকে পরদিন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠায়। ১২ মার্চ তিনি জামিন পান।
গত ১৪ মার্চ এই তদন্ত ক্রাইম ব্রাঞ্চে স্থানান্তরিত হয়। অভিযোগের
প্রতিলিপি পাঠানো হয় ক্রাইম ব্রাঞ্চের ডেপুটি কমিশনারের কাছে। অভিযোগ করা
হয় নবীন কুমারকে হুমকি দিচ্ছেন ওই মহিলা এবং তাঁর সহযোগীরা।
0 মন্তব্যসমূহ