
জিম্বাবোয়ে ক্রিকেট আপাতত নিষিদ্ধ। সেই নিষেধাজ্ঞার রেশ এখনও কাটেনি।
তার মধ্যেই দুঃস্বপ্নের কাউন্ট ডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেটকে
ঘিরে। কারণ আইসিসি-র নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে পারে এবার পাকিস্তান ক্রিকেটও।
অন্য কোনও দেশ নয়, পাকিস্তানের সর্বাধিক জনপ্রিয় প্রচারমাধ্যম দ্য ডন-এর
প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে। সেই প্রতিবেদনের শিরোনাম, আইসিসি-র
নিষেধাজ্ঞা পাকিস্তানের কাছে ওয়েক আপ কল!
দেশের ক্রিকেট প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগে
আইসিসি তাদের সদস্য পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন আফ্রিকান দেশটিকে। এর অর্থ,
আইসিসি অনুমোদিত কোনও টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ তো দূরের কথা, আর্থিক অনুদানও
পাবে না জিম্বাবোয়ে। আইসিসি-র সেই সিদ্ধান্তে ঝড় উঠেছে ক্রিকেট বিশ্বে।
অনেকেই মনে করছেন, জিম্বাবোয়ের ক্ষেত্রে, একটু বেশি তাড়াহুড়ো করে ফেলেছে
ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়মক সংস্থা। লঘু পাপে গুরু দণ্ড দেওয়ার কথাও বলছেন
অনেকে।
ঘটনা হল, জিম্বাবোয়ের মতো একই দশা হতে পারে পাকিস্তানের।
কারণ, পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ডে রীতিমতো সরকারি হস্তক্ষেপ রয়েছে।
পিসিবি-তে প্রচ্ছন্ন প্রভাব রয়েছে ইমরান খানের পাক সরকারের। কয়েকঘণ্টা আগেই
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পাকিস্তানের ক্রিকেটকে ঢেলে সাজানোর কথা বলেছেন।
তারপরেই পাক ক্রিকেটকে ঘিরে শঙ্কা বেড়েছে ক্রিকেট সমর্থকদের।
দ্য ডন-এর বিস্ফোরক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাক ক্রিকেটে দেশের সরকারের
পদও নির্ধারিত রয়েছে। সেদেশের ক্রিকেট বোর্ডের সংবিধান অনুযায়ী,
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী সবসময়ে পিসিবি-র প্যাট্রন হয়ে থাকেন। প্যাট্রন
সরাসরি বোর্ডের নিয়ম নীতি বদলাতে পারেন। পিসিবির প্রেসিডেন্টকেও সরিয়ে
দেওয়ার ক্ষমতা রয়ছে প্যাট্রনের। এতেই সরকারি হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গ উঠে আসে।
পাশাপাশি, পিসিবি-র সংবিধানে আরও অনেক অনুচ্ছেদ রয়েছে। যেখানে সরকারি
হস্তক্ষেপের বিষয় রয়েছে। এই সমস্ত নিয়মের ক্ষেত্রেই আপত্তি জানাতে পারে
আইসিসি।
পিসিবি-র সংবিধানেক ৪৫ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সরকার ইচ্ছেমতো
বোর্ডের এই নিয়মনীতিতে পরিবর্তন আনতে পারে। পাক ক্রিকেটপ্রেমীদের আশঙ্কা
পিসিবি-র এই নিজস্ব সংবিধানই বিপাকে ফেলতে পারে দেশের ক্রিকেটকে।
যদিও পাকিস্তান বোর্ডের দাবি, আইসিসির তরফে তাঁদের বোর্ডের সংবিধানকে
আগেই মান্যতা দেওয়া হয়েছে। এখানে অনেকে উল্লেখ করছেন শ্রীলঙ্কা কিংবা নেপাল
ক্রিকেট সংস্থাকে। সরকারি হস্তক্ষেপের জন্য আইসিসি আগে এই দুই দেশকে
সতর্কবার্তা পাঠিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে ইমরান খান আরও বেশি ক্রিকেট বোর্ডে নিজের
প্রভাব বাড়িয়েছেন। প্রতিটি কাজে হস্তক্ষেপের নজির রয়েছে তাঁর। আইসিসি পুরো
বিষয়টি খেয়াল রাখছে। এখনও সরকারিভাবে আইসিসি-র তরফে কিছু বলা না হলেও,
অচিরেই যে সরকারি এই হস্তক্ষেপ বিপদ ডেকে আনতে পারে, তা বলাই বাহুল্য। তাই
দ্য ডন-এর সতর্কবার্তা, জিম্বাবোয়ে অ্যালার্ম বেল বাজিয়ে দিয়েছে। পাকিস্তান
ক্রিকেট কী শুনবে?
0 মন্তব্যসমূহ