
দিনভর ছিল উৎকন্ঠা। সারাদিন ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলেছে প্রার্থনা।
শেষ পর্যন্ত সন্ধেবেলায় অনেকটাই স্বস্তি পেল যাদব পরিবার। দ্য হেগের
আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে যেন ফের ‘পুনর্জন্ম’ হল কুলভূষণ যাদবের।
পাকিস্তানের সব অভিযোগ খারিজ করে কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করেছে আদালত।
এ যেন একপ্রকার ‘ফাঁড়া’ কাটল যাদব পরিবারে। কুলভূষণ মামলায় আদালতের রায়
শোনামাত্রই উৎসবমুখর হয়েছে গোটা দেশ। কোথাও উড়েছে বেলুন, কেউ বিলি করেছেন
মিষ্টি, কিন্তু এত উচ্ছ্বাসের মধ্যেও যাদব পরিবারের অন্দরে ঘরের ছেলেকে
নিয়ে আশা-আশঙ্কার দোলাচোল যেন কাটছেই না। যতক্ষণ না ঘরের ছেলে ঘরে ফেরে,
ততক্ষণ যেন শান্তি নেই যাদব পরিবারে।
কুলভূষণ মামলায় ভারতের জয়ের পরই
সেন্ট্রাল মুম্বইয়ের এনএম যোশী এলাকায় রীতিমতো উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছিল। ওই
এলাকাতেই বেড়ে ওঠা কুলভূষণের। আদালতের রায় শোনার পরই আনন্দে মাতোয়ারা
হয়েছিলেন কুলভূষণের বন্ধুরা। এত উচ্ছ্বাসের মধ্যেও কুলভূষণের কাকার গলায়
টের পাওয়া গেল আশঙ্কার সুর। প্রাক্তন এসিপি সুভাষ
যাদব বললেন, ‘‘ভারত সরকার যে পদক্ষেপ করেছে, তাতে আমরা খুশি ঠিকই। কিন্তু
আমরা চাই পাকিস্তান থেকে জীবিত অবস্থায় কুলভূষণ ফিরুক। সেটা যতক্ষণ না
হচ্ছে, আশঙ্কা থাকছেই’’। কুলভূষণের এক বন্ধু বন্দনা পাওয়ারের গলাতেও শোনা
গেল আশঙ্কার কথা। তিনিও বললেন, ‘‘যতক্ষণ না ওকে দেখতে পাচ্ছি, ততক্ষণ একটা
আশঙ্কা থাকবেই’’।
এদিকে, আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের রায়ের পরই আকাশে বেলুন উড়িয়েছিলেন
কুলভূষণের বাল্য বন্ধু অরবিন্দ সিং। সেইসঙ্গে মিষ্টি বিলি চলছিল এলাকায়।
‘ভারত মাতা কী জয়’ স্লোগানে মুখরিত ছিল গোটা এলাকা। কুলভূষণ মামলায় ভারতের
জয় প্রসঙ্গে অরবিন্দ বললেন, ‘‘গোটা দেশজুড়ে সবাই যেভাবে প্রার্থনা
করেছিলেন, সেজন্যই রায়টা আমাদের পক্ষে হল। আমরা জানি, দেশজুড়ে সকলে
মন্দির-মসজিদে প্রার্থনা করেছেন কুলভূষণের জন্য…ওকে দ্রুত ছেড়ে দেওয়া
হোক’’। কুলভূষণের আরেক বন্ধু সুনীল সিং বললেন, ‘‘আমরা জানতাম যে আমরা সত্য
কথা বলেছিলাম। সেকারণেই আমরা সেলিব্রেশনের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। বেলুন,
মিষ্টি আনিয়ে রেখেছিলাম। এটা আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালত, এখানে ভুল বিচারের
কোনও জায়গা নেই’’।
0 মন্তব্যসমূহ