
কয়েক মাস আগের ঘটনা। ভারতীয় সেনার এক ব্রিগেডিয়ার তাঁর স্মার্টফোনে একটি
অপারেশনাল মানচিত্রের ছবি তুললেন। তারপর হোয়াটসঅ্যাপে সেই ছবি পাঠিয়ে
দিলেন ব্রিগেড হেডকোয়ার্টারের প্রিন্সিপাল স্টাফকে। সঙ্গে নির্দেশ, ওই
মানচিত্রের একটি কপি দ্রুত তৈরি করতে হবে। ওই প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার
আবার ছবিটি ফরওয়ার্ড করে পাঠিয়ে দিলেন ব্যাটেলিয়নের কম্যান্ডিং অফিসারদের
কাছে। এভাবেই মাত্র কিছুক্ষণের মধ্যেই একটি গুরুত্বপূর্ণ গোপনীয় মানচিত্রের
গোপনীয়তা বলতে কার্যত আর কিছুই পইল না!
এই ঘটনা কোনও ব্যতিক্রম নয়। সেনাবাহিনী সূত্রের খবর, এই ধরনের বেশ কিছু
ঘটনা সাম্প্রতিক অতীতে ঘটেছে। হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক-সহ সোস্যাল মিডিয়ার
অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার একাধিকবার প্রশ্নের মুখে ফেলেছে বাহিনীর গোপনীয়তাকে।
এর জেরেই গতমাসে সেনাবাহিনীর অফিসারদের কাছে সোস্যাল মিডিয়ার ব্যবহার
সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞার বিজ্ঞপ্তি পৌঁছেছে।
ওই নির্দেশে বলা হয়েছে- ভারতীয় সেনার কোনও কর্মী ইন্টারনেট নির্ভর
মেসেঞ্জার, চ্যাট বা ইমেল সার্ভিসের বড় কোনও গ্রুপের সদস্য হতে পারবেন।
ব্যক্তিগত মেসেজের ক্ষেত্রে অনুমতি পাওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে যাঁদের
সঙ্গে মেসেজে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে, তাঁদের উপযুক্ত বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে।
সেনায়
কর্মরত এক আধিকারিকের কথায়, সোস্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার
সম্পর্কে জওয়ানদের কাছে নিয়মিত নির্দেশিকা আসে। টেকনোলজির উন্নয়নের সঙ্গে
সঙ্গে সেই নির্দেশিকার পরিবর্তন প্রয়োজন। সেই প্রয়োজনিয়তা থেকেই গত মাসের
নতুন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও গোপনীয় তথ্যগুলির
গোপনীয়তা সম্পর্কে নিশ্চিত হতেই এই পদক্ষেপ।
সূত্রের খবর, মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের জারি করা ওই নির্দেশিকায়
বলা হয়েছে, ব্যক্তিগত আইটি ডিভাইসের যথেচ্ছ ব্যবহার, বিশেষত স্মার্টফোনে
হোয়াটসঅ্যাপ-সহ অন্য মেসেজিং সার্ভিসের ব্যবহার অত্যন্ত দুশ্চিন্তার বিষয়।
অফিসিয়াল খবরাখবর এগুলির মাধ্যমে শেয়ার করা হলে তা অপরাধ হিসাবে গন্য করা
হবে।
ওই সেনা আধিকারিক জানান, সেনার বেশ কিছু অফিসারের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপের
নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে রীতিমতো ভুল ধারনা রয়েছে। তাঁরা নিয়মিত
হোয়াটসঅ্যাপে গোপনীয় নথিপত্র একে অন্যকে পাঠিয়ে থাকেন। এতে বাহিনী তথা
দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এগুলি আর বরদাস্ত করা হবে না।
0 মন্তব্যসমূহ