
বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলার বিশেষ বিচারপতি সোমবার সুপ্রিম কোর্টে মামলা
শেষ করার জন্য আরও ৬ মাস সময় চেয়ে আবেদন করলেন। ওই মামলায় বিজেপির প্রবীণ
নেতা এল কে আদবানি, মুরলীমনোহর জোশীসহ অন্যান্যরা অভিযুক্ত।
মে মাসে একটি চিঠি লিখে ওই বিশেষ বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিলেন ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁর মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি আরএফ নরিম্যানের নেতৃত্বাধীন এক বেঞ্চের
সামনে মামলাটি ওঠে। সেখানে ওই বিচারকের মেয়াদ এই হাই প্রোফাইল মামলা শেষ
হওয়া পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যায় সে ব্যাপারে দেখতে বলা হয় উত্তর প্রদেশ
সরকারকে।
২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল শীর্ষ আদালত রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ১৯৯২
সালের বাবরি ধ্বংস মামলার বিচারপ্রক্রিয়া প্রতিদিন শুনানির মাধ্যমে দু
বছরের মধ্যে সম্পন্ন করতে বলেছিল।
বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা ‘সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ ধাঁচাকে নাড়িয়ে দিয়ে
যাওয়া’র মত ‘অপরাধ’ কিনা সে সম্পর্কে মন্তব্য না করলেও সুপ্রিম কোর্ট
ভিভিআইপি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে অভিযুক্ত করার জন্য
সিবিআইয়ের আবেদনে সাড়া দিয়েছিল।
তবে উত্তর প্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং বর্তমানে রাজস্থানের রাজ্যপাল হওয়ায় তিনি আপাতত সাংবিধানিক রক্ষাকবচ পাবেন বলে জানিয়েছিল আদালত।
বিচার প্রক্রিয়ায় ২৫ বছর দেরি করার জন্য সিবিআইকে তুলোধনা করেছিল আদালত।
“মূলত সিবিআইয়ের এ মামলায় গড়িমসির কারণে এবং সহজে সমাধান করা যায় এমন
কিছু সমস্যা রাজ্য সরকারের গড়িমসির কারণে সমাধিত না হওয়ায় অভিযুক্তদের
বিচারের আওতায় আনা যায়নি।”
সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, “আদবানি ও অন্য পাঁচ অভিযুক্তের
বিরুদ্ধে মামলা রায়বেরিলির বিশেষ বিচারবিভাগীয় আদালত থেকে লখনউয়ের অতিরিক্ত
দায়রা বিচারপতি (অযোধ্যা বিষয়ক)-র আদালতে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।”
তিন অভিযুক্ত নেতা ছাড়া অন্য যাঁদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা
হয়েছে, তাঁরা হলেন বিনয় কাটিয়ার, সাধ্বী ঋতম্ভরা, বিষ্ণু হরি ডালমিয়া।
এঁদের বিচার হচ্ছে রায়বেরিলিতেই।
শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, “এ ছাড়াও দায়রা আদালত সিবিআইয়ের যৌথ চার্জশিটে
উল্লিখিত ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০ বি (ষড়যন্ত্র) ও অন্যান্য ধারায় চম্পত রাই
বনসল, সতীশ প্রধান, মহান্ত নিত্য গোপাল দাস, মহামদলেশ্বর জগদীশ মুনি, রাম
বিলাস বেদান্তি, বৈকুণ্ঠ লাল শর্মা ও সতীশ চন্দ্র নগরেরর বিরুদ্ধে চার্জ
গঠন করবে।”
শীর্ষ আদালত এও বলেছিল, বিচারপ্রক্রিয়া যদি মুলতুবি হয়, তাহলে পরদিন বা
নিকটতম দিনেই পরবর্তী বিারের দিন ধার্য করতে হবে এবং মুলতুবির কারণ লিখিত
আকারে লিপিবদ্ধ করতে হবে।
একই সঙ্গে বলা হয়েছিল, “প্রমাণাদি লিপিবদ্ধ করার প্রতিটি ধার্য তারিখে
কোনও না কোনও বাদী পক্ষের সাক্ষীতে হাজির থাকার ব্যাপারে সিবিআইকে নিশ্চিত
করতে হবে, যাতে সাক্ষীর অভাবে কোনও দিন নষ্ট না হয়।”
২০০১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এলাহাবাদ হাইকোর্ট যে আদবানি এবং
অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ খারিজ করে দেয় তাকে “ভ্রান্ত” বলে
আখ্যা দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
যে আটজন ভিআইপি অভিযু্ক্ত ছিলেন, তার মধ্যে গিরিরাজ কিশোর এবং বিশ্ব
হিন্দু পরিষদ নেতা অশোক সিংঘল বিচার চলাকালীন মারা গিয়েছেন এবং তাঁদের
বিরুদ্ধে মামলা খারিজ হয়ে গিয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ