
ভারতের রেল পরিকাঠামো উন্নত করতে দ্বিতীয় খসড়া তৈরি করল মোদী সরকার। যার
ঘোষিত উদ্দেশ্য হলো রেল পরিষেবার আধুনিকীকরণ। রেল বাজেট পেশ করার সময়
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ঘোষণা করেন, রেলে বিনিয়োগ করার জন্য সরকারের
কোষাগারে পর্যাপ্ত টাকা নেই। সেকারণেই বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া
বাঁধবে রেল।
দ্বিতীয় খসড়ায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, মোদী সরকার বেসরকারি সংস্থাকে এই
প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার আবেদন জানিয়েছে। এই সংস্থাগুলি নির্দিষ্ট কিছু রুট
বেছে নিয়ে সেখানকার রেল পরিষেবা উন্নত করবে। এটি ভারতীয় রেলের “১০০ দিনের
প্রকল্পের” অধীনে সবচেয়ে বড় পরিকল্পনা বলে মনে করা হচ্ছে, যার অনুমোদন
এসেছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে। নির্দিষ্ট রুটে ইঞ্জিন, কামরা, চাকা, সব
কিছুরই দয়িত্বে থাকবে বেসরকারি সংস্থা। এককথায় ‘কর্পোরাটাইজ’ করা হবে
রেলকে।
আইআরআরসি (ইন্ডিয়ান রেলওয়ে রোলিং স্টক কোম্পানি), চীনের
সিআরআরসি কর্পোরেশন লিমিটেডের সঙ্গে আদলে একটি মডেল তৈরি করেছে। সম্প্রতি
বিশ্বের বাজারে সবচেয়ে বড় রোলিং স্টক কোম্পানি চীনের সিআরআরসি, যা ২০১৫
সালে গঠিত হয় ৪০টি ছোটবড় উৎপাদন সংস্থা একত্রিত করে। কিন্তু ভারতীয়
অধিকর্তাদের আশা, ভবিষ্যতে সেই জায়গাই নেবে আইআরআরসি, যা আকার আয়তনে জিই,
সিমেন্স, বা বম্বারডিয়ারের চেয়েও বড় হবে।
বেসরকারি সংস্থাদের আহ্বান জানালেই কি তারা এই দায়িত্ব নিতে রাজি হবে?
ক্রেডিট সুইসের নীলকান্ত মিশ্র বলেন, “পরিকাঠামোর মধ্যে রেল লাইন,
সিগন্যালিং সিস্টেম এবং বৈদ্যুতিক সরঞ্জামে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন
রয়েছে। ট্রেন চালানো অতটাও ব্যায়বহুল নয়। সেক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থা যদি
দেখে লাভ করতে পারবে তাহলে তারা জোট বাঁধবে।” অন্যদিকে, বেসরকারি
সংস্থাগুলিকে সরকারি ক্ষেত্রে প্রবেশ করার দরজা খুলে দেওয়া হলো বলে মনে
করছেন আরনেস্ট অ্যান্ড ইয়ং-এর কুলজিৎ সিং।
উল্লেখ্য, ভারতীয় রেল
বেসরকারি হয়ে যাবে, এই নিয়ে রাজনৈতিক মহল সরগরম হয়ে উঠেছে। কিন্তু
রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, সরকার
‘কর্পোরাটাইজিং’ করার ভাবনাচিন্তা করছে, বেসরকারিকরণ নয়।
0 মন্তব্যসমূহ