
ভারতীয় রেলের ১৬০ বছরের ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। শুধু রেল কেন,
বেনজির ঘটনার সামনে হতভম্ব ভারতের সরকার বাহাদুরও। ৩২ বছরের এক
রূপান্তরকামী মহিলা পেনশনের দাবি করেছিলেন ভারতীয় রেলের কাছে। ২০১৭ সালে
মহিলার বাবা (পেশায় রেলকর্মী) মারা গিয়েছেন। তাঁর পরিবারের পেনশনের জন্যই
ভারতীয় রেলের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রুপান্তরকামী ওই মহিলা। লিঙ্গ পরিবর্তন করে
‘মেয়ে’ হওয়া সন্তানের পেনশন পাওয়ার ক্ষেত্রে কী শর্ত হওয়া উচিত, তা নিয়ে
রীতিমত হিমসিম খাচ্ছে কেন্দ্র।
এক রেল আধিকারিক জানিয়েছেন ২০১৮ সালের মাঝামাঝি
ভারতীয় রেলের দক্ষিণ শাখার চেন্নাই দফতরে এই মর্মে মহিলার কাছ থেকে চিঠি
এসেছিল। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সঠিক নিয়ম নিয়ে পরিষ্কার ধারণা না থাকায় সেই
চিঠি কেন্দ্রের সংস্লিষ্ট মন্ত্রকে পাঠানো হয়েছে।
পেনশনের দাবি জানানো মহিলার যুক্তি, তিনি তাঁর বাবার মৃত্যুর আগেই লিঙ্গ
পরিবর্তন করে মহিলার জীবন বেছে নিয়েছেন, সুতরাং এ ক্ষেত্রে অবিবাহিত মেয়ে
হিসেবে বাবার পেনশন তাঁরই প্রাপ্য।
মহিলার চিঠি পাওয়ার পর চেন্নাই
দক্ষিণ শাখার উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছিলেন, “ভারতীয় রেলের ১৬০ বছরের
সুদীর্ঘ ইতিহাসে এমন দাবি নজিরবিহীন। তাই এই নিয়ে সরকারের নীতি খুব স্পষ্ট
নয়। স্বাভাবিক ভাবেই আমরা এই স্তরে সমস্যার সমাধান করে উঠতে পারছি না”।
কেন্দ্রীয় আধিকারিকের বক্তব্য, “মৃতের সন্তান আমাদের কাছে তামিলনাড়ু
ট্রান্সজেন্ডার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশান দ্বারা স্বীকৃত পরিচয়পত্র জমা
দিয়েছেন। তাই বিষয়টিকে ট্রান্সজেন্ডার কেস হিসেবে দেখছি। কিন্তু সে
ক্ষেত্রেও আইন খুব স্পষ্ট নয়”।
ভারতের ফ্যামিলি পেনশন নীতি ধার্য হয় ‘ভারতীয় পেনশন আইন, ১৮৭১’,
কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিস রীতি, ১৯৭২’-এর মতো বেশ কিছু আইনের সঙ্গে সঙ্গতি
রেখেই।
0 মন্তব্যসমূহ