
দেশের মাটিতে জয় এসেছে প্রতিপক্ষকে অলআউট করে। এবার বিদেশের মাটিতে
হাজির প্রত্যয়ী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদি। শনিবারে মালদ্বীপের সর্বোচ্চ
রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘রুল অফ নিশান ইজুদ্দেন’-এ ভূষিত হলেন ভারতের
প্রধানমন্ত্রী। দ্বিতীয় টার্মে কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসে নরেন্দ্র মোদি প্রথম
বিদেশ সফর হিসেবে বেছে নিয়েছেন প্রতিবেশী মালদ্বীপকেই। সেখানে গিয়েই
সম্মানিত তিনি। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ সোলি বরাবরই ভারত-বন্ধু। গত
বছর চিন-পন্থী আবদুল্লা ইয়ামিনকে সরিয়ে তিনি প্রেসিডেন্টের গদি দখল
করেছিলেন। কার্যত চিনের হাতে চলে যাওয়া মালদ্বীপ সোলি-র হাত ধরে ফের একবার
ভারত-মুখী। লোকসভায় বিপুল জয়ের পরে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে মোদি আগেই আমন্ত্রণ
জানিয়েছিলেন সোলি-কে। মাস পেরোতে না পেরোতেই সেই দেশে হাজির প্রধানমন্ত্রী
মোদি।
‘পুরনো বন্ধু’ নরেন্দ্র মোদিকে পেয়ে আতিথেয়তায় কার্পণ্য করলেন না
সোলি-ও। বিমানবন্দরে মোদি-কে অভ্যর্থনা জানাতে হাজির হলেন স্বয়ং
বিদেশমন্ত্রী আবদুল্লা শাহিদ। প্রেসিডেন্ট সোলি-র সঙ্গে সাক্ষাৎ-এর
মুহূর্তও স্মরণীয় হয়ে থাকল রিপাবলিক স্কোয়্যারে। এমনটাই মনে করছেন কূটনেতিক
মহলের একাংশ। মালদ্বীপের পার্লামেন্টে ভাষণও দিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর
বক্তৃতায় উঠে এল চিরাচরিত সন্ত্রাসবাদ থেকে ঐতিহাসিক স্থাপত্যের সংরক্ষণের
বার্তা।
প্রথমবার বিদেশ সফরেই মোদি মালদ্বীপের সঙ্গে ছয়টি
গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করলেন। এর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হল
প্রতিরক্ষা ও সমুদ্র-নীতি। সেই সঙ্গে দুটো বিশেষ প্রজেক্টও চালু করলেন
তিনি। ভারত মহাসাগরে চিনের আধিপত্য কমাতে উপকূলবর্তী অঞ্চলে নজরদারি রাডার
সিস্টেমের উদ্বোধন করা হয় এদিন। পাশাপাশি, মালদ্বীপের প্রতিরক্ষা দফতরে
ট্রেনিং সেন্টার চালু হল সোলি-মোদির হাত ধরে। বিদেশ সচিব বিজয় গোখেল এই দুই
প্রোজেক্ট নিয়ে উচ্ছ্বসিত। জানিয়েছেন, ১৮০ কোটি টাকার এই দুই প্রোজেক্ট
দুই দেশকে আরও কাছাকাছি আনতে চলেছে।
মোদি মালদ্বীপে নিজের বক্তৃতায় বলেন, “স্থায়ী বৃদ্ধির হার বজায় রেখে
দেশের উন্নতি ঘটানোয় এবং মালদ্বীপ আন্তর্জাতিক সৌর জোটের অংশ হওয়ায় আমি
ভীষণ খুশি। মালদ্বীপের ফ্রাইডে মসজিদের সংরক্ষণের কাজে ভারত সাহায্য করবে।
এমন ঘোষণা করতে পেরে দারুণ অনুভূতি হচ্ছে। বিশ্বের কোথাও এমন প্রবালের তৈরি
ঐতিহাসিক মসজিদ নেই।” পাশাপাশি, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধেও মালদ্বীপের
মাটিতে দাঁড়িয়ে গলা চড়িয়েছেন তিনি। মোদিকে টুইটারে ধন্যবাদ জানিয়েছেন
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ সোলি-ও।
এদিনই মোদি মালদ্বীপ থেকে উড়ে যাবেন আরেক প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কায়।
চিনকে লাল চোখ দেখাতে ভারত ইতিমধ্যেই জাপান ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক
চুক্তি করতে চলেছে। চিনের সহায়তায় কলম্বোয় যে বন্দর গড়ে উঠেছে, সেখান
থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে ইস্ট কন্টেনার টার্মিন্যাল গড়তে চলেছে
ভারত। এই প্রকল্পেই ভারত অন্তর্ভূক্ত করেছে জাপানকে।
0 মন্তব্যসমূহ