
অপেক্ষাকৃত কম উন্নত ১২টি ব্লককে চিহ্নিত করে এই ব্লক গুলির উন্নয়নে তিন
বছরের প্রকল্প হাতে নিয়েছে রাজ্য সরকার। এই ব্লক গুলির ৮০ শতাংশ শূন্য পদ
পূর্ণ করা হবে।
সোমবার রাজ্য মন্ত্রী সভার বৈঠকে গৃহীত হয় এই সিদ্ধান্ত।
মন্ত্রীসভার বৈঠক শেষে সন্ধ্যায় মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই
সিদ্ধান্তের কথা জানান মন্ত্রী রতন লাল নাথ। এই বছর রাজ্যের ১০ টি কম উন্নত
ব্লককে চিহ্নিত করে বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী বণ্টন করা হয়েছে। এই ব্লক
গুলি হল ছাউমনু, ডম্বুরনগর, রইস্যাবাড়ি, দামছরা, দসদা, করবুক, শিলাছড়ি,
মুঙ্গিয়াকামী, রুপাইছড়ি ও তুলা শিখর ব্লক। এই ১০ টি ব্লকের সাথে নতুন করে
অম্পি ও গঙ্গানগর ব্লককে যুক্ত করা হয়েছে। এই ১২টি ব্লকের জন্য নতুন একটা
প্রকল্প চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে রাজ্য মন্ত্রী সভা। সোমবার রাজ্য
মন্ত্রী সভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
মন্ত্রী সভার বৈঠক শেষে
এইদিন সন্ধ্যায় মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলন করে শিক্ষা মন্ত্রী রতন লাল নাথ
মন্ত্রী সভার এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি জানান এই ১২ টি ব্লককে এগিয়ে
নিয়ে যাওয়ার জন্য তিন বছরের এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তার জন্য
রাজ্য বাজেট থেকে ৫০ কোটি টাকা পৃথক ভাবে রাখা হয়েছে বলেও জানান
তিনি। এছাড়াও বিভিন্ন দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হবে এই ১২ টি ব্লক এলাকায়
অন্যান্য ব্লকের তুলনায় অতিরিক্ত ব্যয় করার জন্য। ৬ মাস পর পর
মুখ্যমন্ত্রী এই ব্লক গুলির উন্নয়নের অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা সভা করবেন।
এই ১২ টি ব্লকের প্রত্যেকটি ব্লকের জন্য এক জন অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া
হবে। এই অফিসারের পদ মর্যাদা হতে বিশেষ সচিবের। এই অফিসারের নাম স্টেট
প্রভারি অফিসার থাকবে বলে জানান মন্ত্রী রতন লাল নাথ। স্টেট প্রভারি অফিসার
ব্লকের সকল কাজের পর্যালোচনা করবেন। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ এই
তিন বছরের জন্য এই পরিকল্পনা। এই ব্লক গুলির উন্নয়নের পরিমাপ করারও
পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়েছে। ১০০ শতাংশ উন্নয়নের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও
পুষ্টি জন্য রয়েছে ২০ শতাংশ, শিক্ষায় ২০ শতাংশ, কৃষি ও জল সম্পদে ২০
শতাংশ, রাস্তা ও পরিকাঠামোয় ২০ শতাংশ, জীবন জিবিকা ও দক্ষতায় ১৫ শতাংশ,
আর্থিক দিক ৫ শতাংশ। তার ভিত্তিতে ব্লক এলাকার উন্নয়নের পরিমাপ করা হবে।
এই ১২ টি ব্লক এলাকায় যে সকল সরকারি কর্মচারীকে নিয়োগ করা হবে তাদেরকে
তিন বছরের জন্য নিয়োগ করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী রতন লাল নাথ।
তিন বছর পর
এই সকল সরকারি কর্মচারীরা নিজেদের পছন্দের জায়গায় বদলি হয়ে যেতে পারবে
বলেও জানান তিনি। এই ১২ টি ব্লক এলাকায় যে সকল শূন্য পদ রয়েছে তার ৮০
শতাংশ শূন্যপদ পূরণ করা হবে।রাজ্যে ক্ষুদ্র, মাঝারি সিল্পের পাশাপাশি বড়
ধরনের শিল্প যেন স্থাপন করা যায়, তার জন্য এইদিন মন্ত্রী সভায়
গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রী রতন
লাল নাথ জানান গত এক বছরে রাজ্যে ১৪৭৪ টি ছোট ও মাঝারি শিল্প স্থাপন
হয়েছে। আর এতে প্রায় ৩০০০ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। তাই বর্তমানে
ত্রিপুরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন স্কিমে সংশোধন আনা হয়েছে।
আগে রাজ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প স্থাপনের জন্য ভর্তুকির ব্যবস্থা থাকলেও
বড় শিল্পের ক্ষেত্রে ছিল না এই সুযোগ। বর্তমানে বড় শিল্প স্থাপন করলে
রাজ্যের SGST লাগবে না। বিদ্যুতের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ ছার দেওয়া হবে। কর্মী
নিয়োগ করলে EPF-এর টাকা প্রদান করতে হবে না। এই টাকা রাজ্য সরকার বহন
করবে। এছাড়াও আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছার দেওয়ার কথা জানান মন্ত্রী রতন লাল
নাথ।এইদিনের বৈঠকে আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
তবে রাজ্যের বর্তমান সরকার রাজ্যের বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়াস
যে, জারি রেখেছে তা এইদিনের মন্ত্রী সভার সিদ্ধান্ত থেকে স্পষ্ট। রাজ্যে
বড় শিল্প স্থাপনের জন্য এইদিন মন্ত্রী সভায় যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা
হয়েছে, তাতে করে আগামি দিনে রাজ্যে বড় শিল্প স্থাপনে শিল্পপতিরা উৎসাহ
দেখাবে তা বলাই বাহুল্য।
0 মন্তব্যসমূহ