
জাপান-ভারত সম্পর্ক দৃঢ়তর করতে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
বলেন, দুই দেশের সংস্কৃতির মধ্যে পারস্পরিক সম্ভ্রমের কারণে বিশ্বের সঙ্গে
ভারতের সম্পর্ক নির্ধারণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে জাপান।
সেদেশের কোবে শহরে প্রবাসী ভারতীয়দের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই
পারস্পরিক সম্ভ্রমের সূত্র ধরেই আজ জাপান ভারতের জন্য বুলেট ট্রেন তৈরি
করছে।
“বিশ্বের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের কথা যদি বলি, জাপানের গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা রয়েছে সেখানে। ভারত-জাপান সম্পর্ক বহু শতাব্দী প্রাচীন। একে অপরের
সংস্কৃতি এবং সভ্যতার প্রতি সম্ভ্রম, শুভকামনা, এবং অংশীদারির মনোভাব
রয়েছে। এমন একটা সময় ছিল যখন আমরা একসঙ্গে গাড়ি তৈরি করছিলাম, এখন বুলেট
ট্রেন তৈরি করছি,” বলেন মোদী। শুক্রবার থেকে অনুষ্ঠেয় জি-২০ শীর্ষবৈঠকে অংশ
নিতে বর্তমানে জাপানের ওসাকায় রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
জাপানের সাহায্যে মুম্বই এবং আহমেদাবাদের মধ্যে প্রথম বুলেট ট্রেন
চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে ভারত। আশা করা হচ্ছে, উচ্চাকাঙ্ক্ষী এই প্রকল্পের
প্রথম ধাপ সম্পূর্ণ হবে ২০২২ সালের মধ্যে। ৫০৮ কিমির এই প্রকল্পের জন্য
প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ করছে ন্যাশনাল হাই-স্পিড রেল কর্পোরেশন লিমিটেড।
সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনের সময় প্রবাসী ভারতীয়দের সাহায্যের জন্য
তাঁদের ধন্যবাদ দিয়ে মোদী জানান, জাপান প্রবাসী বহু ভারতীয় যেমন ভারতে এসে
বিভিন্ন কেন্দ্রে কাজ করেছেন, অনেকেই টুইটার এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া
মঞ্চ ব্যবহার করেছেন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে বার্তা প্রচার করতে।
প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর সময় ভারত-জাপান
সম্পর্ক যে নতুন উচ্চতা ছুঁয়েছিল, সেকথাও বলেন মোদী। “প্রায় দু’দশক আগে
প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী এবং জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী
ইয়োশিরো মোরি আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ককে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক করে তোলেন।
২০১৪ সালে আমি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর আমি আমার প্রিয় বন্ধু প্রধানমন্ত্রী
শিনজো আবের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ়তর করার সুযোগ পাই। নতুন ভারতবর্ষে এই সম্পর্ক
আরও মজবুত হবে,” বলেন মোদী, এবং আগামী পাঁচ বছরে ভারতের ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের
অর্থনীতি হয়ে ওঠার বাসনার কথা উল্লেখ করেন।
অন্যদিকে জি-২০ শীর্ষবৈঠকের প্রাক্কালে আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড
ট্রাম্প শত্রুমিত্র নির্বিশেষে বাণিজ্যিক শুল্ক এবং বিদেশনীতি নিয়ে
সমালোচনার ঝড় তুলে যথারীতি আলোড়ন ফেলেছেন। দীর্ঘস্থায়ী আমেরিকা-চিন বাণিজ্য
যুদ্ধ শুক্রবার থেকে দুদিন-ব্যাপী বিশ্বনেতাদের এই শীর্ষবৈঠকের সম্ভবত
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে চলেছে। অবশ্য বিশ্ব পরিবেশ এবং উত্তর কোরিয়া
বা ইরানের মতো উত্তপ্ত ইস্যু নিয়েও যথেষ্ট ঝড় ওঠার সম্ভাবনা।
কোনোরকম ভনিতা না করেই দীর্ঘকালের মিত্ররাষ্ট্র ভারতকে একহাত নিয়েছেন
ট্রাম্প, মার্কিন পণ্যের ওপর “অগ্রহণীয়” শুল্ক বসানোর জন্য। একটি টুইটে
ট্রাম্প লেখেন, “বহুবছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অত্যন্ত চড়া
শুল্ক প্রয়োগ করা সত্ত্বেও সম্প্রতি শুল্কের হার আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এটা
গ্রহণযোগ্য নয়, এবং এই শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে।”
0 মন্তব্যসমূহ