
আগামিকাল, বৃহস্পতিবার সকালে গুজরাট উপকূলে আছড়ে পড়তে চলেছে ‘সাইক্লোন
বায়ু’। গত দুদিন ধরে আরব সাগরের ওপর যে গভীর নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে, তার থেকেই সৃষ্টি হয়েছে ‘বায়ু’,
বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি)। ওই দপ্তরের সাইক্লোন সতর্কতা
বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, আগামী ১২ ঘন্টায় প্রবল
ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে ‘বায়ু’।
আইএমডি-র এক সতর্কতা বার্তায় বলা হয়েছে, “এই ঝড় খুব সম্ভবত প্রবল
ঘূর্ণিঝড় হিসেবে উত্তরদিকে ঘুরে ভেরাভল এবং দিউ অঞ্চলে পোরবন্দর এবং মহুভার
মাঝামাঝি গুজরাট উপকূল পেরোবে। ১৩ জুন ভোরের দিকে সম্ভাব্য হাওয়ার গতি
১১০-১২০ কিমি প্রতি ঘন্টা, যা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১৩৫ কিমি প্রতি ঘন্টা।”
ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রাণহানির সম্ভাবনা যথাসম্ভব কমাতে গুজরাট সরকারের পক্ষ
থেকে ইতিমধ্যেই উপকূলবর্তী এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে
নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন গ্রাম থেকে ১.২৫
লক্ষের বেশি মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে খবর। এঁদের বেশিরভাগেরই
বাস উপকূলের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে। এছাড়াও পশ্চিম রেলওয়ে বাতিল করেছে তাদের
একাধিক ট্রেন।
গুজরাটে জারি সতর্কবার্তা
সাইক্লোন ‘বায়ু’র মোকাবিলায় উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে গুজরাট প্রশাসন।
মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি জানিয়েছেন, উপকূলের বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে
নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, এবং কচ্ছ থেকে দক্ষিণ গুজরাট পর্যন্ত সমগ্র উপকূল জুড়ে
রয়েছে উচ্চ সতর্কতা। আগামী কয়েকদিন মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ
দেওয়া হয়েছে, এবং প্রতিটি বন্দরে বিপদ সঙ্কেতের পতাকা ওড়ানোর নির্দেশ
দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মঙ্গলবার সাইক্লোন মোকাবিলা
ব্যবস্থার পর্যালোচনা করেন এবং আধিকারিকদের নির্দেশ দেন, যেন মানুষজনের
নিরাপত্তার জন্য সবরকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এক উচ্চস্তরের পর্যালোচনা বৈঠকে
শাহ আধিকারিকদের আরও নির্দেশ দেন যেন সবরকম জরুরি পরিষেবা, যেমন পানীয় জল,
বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ব্যাহত না হয়, এবং হলেও যেন
দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হয়।
ওড়িশার পরামর্শ
মুখ্যমন্ত্রী রূপানি বলেছেন, সমস্ত সরকারি কর্মচারীদের ছুটি আপাতত বাতিল
করা হয়েছে এবং তাঁদের কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে। “(বুধবারের) ক্যাবিনেট
মিটিং শেষ হলেই জেলায় জেলায় ত্রাণ এবং উদ্ধারকার্য পরিচালনা করতে পৌঁছে
যাবেন মন্ত্রীরা। ১৩ এবং ১৪ জুন আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ দিন। ত্রাণ এবং
উদ্ধারের ক্ষেত্রে আমরা সেনাবাহিনী, ন্যাশনাল ডিজাস্টার রিলিফ ফোর্স,
উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং অন্যান্য সংস্থার কাছে সাহায্য চেয়েছি,” জানিয়েছেন
তিনি।
ইতিমধ্যে গুজরাটের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস
দিয়েছে ওড়িশা সরকার, যেখানে গত মে মাসেই ‘সাইক্লোন ফণী’র হানায় মৃত্যু হয়
৬০ জনের। গুজরাটের মুখ্য সচিব জে এন সিং ওড়িশার মুখ্য সচিব এ পি পাধিকে ফোন
করে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সাইক্লোন মোকাবিলা করতে তাঁর পরামর্শ চান বলে
জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই।
0 মন্তব্যসমূহ