
মন্ত্রিত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে৷ এখন তার
তিনি পরিবর্তনের জমানার বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকারের হেভিওয়েট কেউ নন, বরং
সাধারণ বিজেপি বিধায়ক৷ তবে মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়ার পর ইঙ্গিতময় বার্তা
দিয়ে রাজনৈতিক জল্পনা আরও উসকে দিলেন সুদীপ রায়বর্মণ৷ আগরতলার একটি সংবাদ মাধ্যমকে একান্ত সাক্ষাতকারে তিনি জানিয়েছেন- বিশ্বাস রাখুন, যা হয়েছে
তা ভালোই হয়েছে৷
ত্রিপুরায় দীর্ঘ দু দশকের বাম শাসনের
অবসান হয় গত বিধানসভা নির্বাচনে৷ সেই নির্বাচনে সুদীপ রায়বর্মণের
নেতৃত্বে দলত্যাগ করে বিধায়করা যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে৷ তারপর বিপুল ভোটে
জয় পেয়ে ক্ষমতায় আসে বিজেপি ও জোট আইপিএফটি৷ সুদীপবাবুকেই রাজ্যের
রাজনীতিতে পরিবর্তের অন্যতম কাণ্ডারি বলে ধরা হয়৷
এমন হেভিওয়েট নেতা
সুদীপ রায়বর্মণকে স্বাস্থ্য দফতর সহ আরও তিনটি দফতরের দায়িত্ব থেকে ছেঁটে
দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব৷ তিনি আগেই জানিয়েছিলেন দল ও সরকারে
থাকা বিভীষণদের কোনওভাবেই রেয়াত করা হবে না৷ সুদীপবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ
ছিল তিনি বিজেপি বিরোধী অবস্থান নিয়ে চলেছেন৷ লোকসভা নির্বাচন ও
প্রধানমন্ত্রী মোদী দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় বসতেই ত্রিপুরা সরকারে বড়সড়
পরিবর্তন ঘটিয়েছেন বিপ্লববাবু৷ জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয়
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অনুমতি মিলেছে এতে৷এদিকে সদ্য মন্ত্রিত্ব চলে
যাওয়া সুদীপ রায়বর্মণকে ঘিরে ত্রিপুরার রাজনৈতিক পরিস্থিতি আলোড়িত৷
শনিবারই রাজ্যের সচিবালয় থেকে তাঁকে ছাঁটাই করার নোটিশ জারি করা হয়৷
প্রতিক্রিয়ায় সুদীপবাবু জানিয়েছেন- আমি সাধ্যমতো আমার দফতর স্বাস্থ্য
বিভাগ ও বিজ্ঞান বিভাগের কাজ করতে চেয়েছি৷ এটা জনগণই বিচার করবেন কতটা ঠিক
বা ভুল করেছি৷ মুখ্যমন্ত্রীর হয়ত আমার কাজ পছন্দ হয়নি, তাই তিনি আমাকে
বাদ দিলেন৷ আমি নিজের স্বাস্থ্যে মনযোগ না দিয়েও স্বাস্থ্য বিভাগের জন্য
কার করেছি৷
সুদীপ রায়বর্মণের মন্ত্রিসভা
থেকে বাদ পড়ার পরেই প্রশ্ন উঠছে এরপর কার পালা ? কারণ মুখ্যমন্ত্রী আগেই
জানিয়েছিলেন- তিনি দলের বিভীষণদের বিরুদ্ধে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালাবেন৷
ফলে নতুন ছাঁটাইয়ের তালিকায় কারা কারা রয়েছেন তা নিয়েও জোর জল্পনা
চলছে আগরতলার রাজনৈতিক মহলে৷ অভিযোগ, সুদীপবাবু তাঁর পুরনো দল কংগ্রেসের
সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেননি৷ নির্বাচনের সময় তিনি কংগ্রেসকে ভিতরে ভিতরে
অনেক সাহায্য করেছেন৷ যদিও প্রাক্তন মন্ত্রীর দাবি- এসবই রটনা৷
বাম জমানায় টানা বিধায়ক ও বিরোধী
কংগ্রেস নেতা হিসেবে ত্রিপুরার রাজনীতিতে সুপরিচিত সুদীপ রায় বর্মণ৷ তাঁর
পিতা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীররঞ্জন বর্মণ৷ প্রথম সুদীপবাবু কংগ্রেস
ছেড়ে অনুগামী বিধায়কদের নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন৷ ত্রিপুরা
বিধানসভায় তৃণমূল হয়েছিল বিরোধী দল৷ পরে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন৷ তারপরেই
ত্রিপুরায় ক্ষমতা দখল করে বিজেপি৷ হাসপাতালের উন্নতিতে কোমর কষে নেমেছিলেন
তিনি৷ এমনকি দুষ্কৃতিদের হাতে চিকিৎসকদের মার খাওয়ার ঘটনায় সরকারের
ভূমিকা নিয়ে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ দেখিয়েছিলেন৷ খোদ মন্ত্রীর মুখে নিরাপত্তা
নিয়ে এমন কড়া সমালোচনায় অস্বস্তি বেড়েছিল মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের৷
সদ্য লোকসভা নির্বাচনে ত্রিপুরায় দুটি
আসনেই জয় পেয়েছে বিজেপি৷ তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা, দুটি কেন্দ্রেই দ্বিতীয়
স্থানে উঠে এসেছে কংগ্রেস৷ প্রধান বিরোধী সিপিএম নেমেছে তৃতীয় স্থানে৷
নির্বাচনী প্রচারে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রাজা প্রদ্যোৎকিশোর
দেববর্মা জানিয়েছিলেন- সুদীপ রায়বর্মণকে ফের ফিরিয়ে নেওয়া হবে
কংগ্রেসে৷ আগেই বিজেপির রাজ্য সহ সভাপতি পদ ছেড়ে পুরনো দল কংগ্রেসে ফিরে
এসেছেন সুবল ভৌমিক৷