
“এ এক রোগ, অভিযোগ” হীরক রাজের এই উক্তিকেই বোধহয় মনে মনে আওড়াচ্ছেন
বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) সভাপতি মায়াবতী। তাঁর নিজের ও দলের প্রতীকী
মূর্তি স্থাপন নিয়ে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে জবাব
দিয়েছেন তিনি।
সুপ্রিম কোর্টের সামনে পেশ করা এক প্রতিবেদনে মায়াবতী মঙ্গলবার বলেছেন,
জনগণের ইচ্ছেকে সম্মান জানাতে তাঁর এবং তাঁর দলের প্রতীক হাতির মূর্তি
স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্ট ৮ ফেব্রুয়ারি
মায়াবতীকে জানিয়ে দেয় যে, লখনৌ ও নয়ডাতে নিজের ও তাঁর দলের প্রতীক হাতি
স্থাপনের জন্য জনসাধারণের যে টাকা তিনি ব্যয় করেছিলেন তা ফেরত দিতে হবে।
কোর্টে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে মূর্তি স্থাপনের জন্য অর্থব্যয় প্রসঙ্গে
তিনি বলেন, “স্মৃতিস্তম্ভগুলি সামাজিক সংস্কারকদের মূল্যবোধ ও আদর্শ
উন্নয়নের উদ্দেশ্য তৈরী করা হয়েছে, বিএসপির প্রতীক উন্নয়নের জন্য নয়।” তিনি
আরও বলেন, নির্মাণকার্যের জন্য যে অর্থ ব্যয় হয়েছে তা বিধানসভা থেকে পাশ
হওয়া নির্মাণ তহবিলের বরাদ্দ অর্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৮
ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন
বেঞ্চ জানায়, মামলাটি তদন্তসাপেক্ষ অবস্থায় রয়েছে, তাই আগামী ২ এপ্রিল এই
মামলার চূড়ান্ত শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
বিগত ২০০৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে মায়াবতী সরকার একাধিক দলিত
স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে, যার মধ্যে বিএসপি প্রতিষ্ঠাতা কাঁসি রাম ও
বিএসপির নির্বাচনী প্রতীক ‘হাতির’ মূর্তি ছিল। ফেব্রুয়ারিতে এক আইনজীবীর
দায়ের করা পিটিশনে উল্লেখ করা হয় যে, লক্ষ্ণৌ, নয়ডা এবং রাজ্যের কয়েকটি
স্থানে ২,৬০০ কোটি টাকারও বেশি অর্থ ব্যয়ে স্মৃতিস্তম্ভ ও মূর্তি নির্মিত
হয়েছিল। আবেদনকারীর যুক্তি ছিল যে, নিজের মূর্তি নির্মাণের জন্য এবং
রাজনৈতিক দলের প্রচারের জন্য জনসাধারণের অর্থ ব্যবহার করা যাবে না।
এরপরেই
কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স দফতর মায়াবতীর বিরুদ্ধে ‘মেমোরিয়াল স্ক্যাম’-এর
অভিযোগ আনে। তারা জানায়, এই ধরনের নির্মানকাজের জন্য ১১ কোটি টাকার
লোকসানের মুখে পড়েছে রাজ্য। এই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে ইডি আর্থিক
তছরূপ প্রতিরোধ আইনের (পিএমএলএ) অধীনে একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছে
মায়াবতীর বিরুদ্ধে।