
শনিবার থেকেই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে আসা যৌন
হেনস্থার অভিযোগের খবর নিয়ে সারা দেশ তোলপাড়। আদালতের তরফ থেকে সমস্ত
অভিযোগ “অস্বীকার” করে বলা হয়, সেগুলি “সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং কুৎসিত”।
অভিযোগকারিণী এক ৩৫ বছরের মহিলা কোর্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট। ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা
কাটতে না কাটতেই মুখ খুললেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন
গগৈ-এর সমর্থনে অর্থমন্ত্রী তাঁর ব্লগে লেখেন, “বিচারব্যবস্থার পাশে
দাঁড়ানোর সময় এটা”।
“একজন বিচারপতিকে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে এবং পেশাগত জীবনে চিরকাল অন্যেরা
বিচার করে যান। যতবার তিনি কোনও মন্তব্য করেন অথবা কোনও মামলায় রায় দেন,
তাঁর প্রতিটা শব্দ কিমবা অক্ষর যাচাই করেন। শিষ্টাচার, মূল্যবোধ, নৈতিকতার
নিরিখে বিচার করলে বর্তমান প্রধান বিচারপতি একজন সম্মাননীয় ব্যক্তি।
সমালোচকরা তাঁর রায় নিয়ে সহমত না হলেও তাঁর মূল্যবোধ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন না
কেউ”, নিজের ব্লগে লিখেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
গত বছর ডিসেম্বরে যখন সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতি (সদস্যদের মধ্যে
রঞ্জন গগৈও ছিলেন) তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রকে ছাড়া এক সাংবাদিক
বৈঠক করে স্পর্শকাতর মামলা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আওয়াজ উঠিয়েছিলেন, কেন্দ্র
কিন্তু তখন একেবারেই নীরব ছিল। এবার সেরকমটা হল না।
ব্লগে জেটলি আরও
বলেছেন, প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, গণমাধ্যম তাঁকে
নেতিবাচক ভাবে ছড়িয়ে দিয়েছে। বিচারবিভাগ, এই প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি নষ্ট
হচ্ছে এতে, জানিয়েছেন জেটলি। “মনে রাখা দরকার এই প্রচেষ্টা এই প্রথম নয়,
শেষ বারের জন্যেও হচ্ছে না। প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি যারা নষ্ট করছেন,
তাঁদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ না নিলে এই ধারা চলতেই থাকবে”।
প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগকারিণীর অভিযোগ মূলত দু’টি কারণ দেখিয়ে
তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এক তাঁর দফতরে দায়িত্ব বদলানোর পেছনে
কারণ জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেন তিনি। এবং মেয়ের স্কুলে এক প্রদর্শনী চলায়
তিনি কাজে আসতে না পারায়।
সুপ্রিম কোর্টের সাধারণ সম্পাদকের দফতর থেকে জানানো হয়েছে যে “চারটি
মিডিয়া সংস্থা – লিফলেট, দ্য ওয়ায়ার, ক্যরাভান এবং স্ক্রোল.ইন-এর পক্ষ থেকে
ইমেইল আসে, এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে উত্তরের আবেদন করা হয়”। জবাবে আদালতের তরফ
থেকে সমস্ত অভিযোগ “অস্বীকার” করে বলা হয়, সেগুলি “সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং
কুৎসিত”। প্রধান বিচারপতি নিজেও বলেন, “চারটি অনলাইন প্রকাশনার তরফে আমার
সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় – ক্যারাভান, লিফলেট, স্ক্রোল এবং ওয়ায়ার। তারা
অভিযোগের বিরুদ্ধে আমার প্রতিক্রিয়া জানতে চায়। জবাব দেওয়ার জন্য আমাকে ১২
ঘন্টাও সময় দেওয়া হয় নি। সেক্রেটারি জেনারেলের তরফে অভিযোগ অস্বীকার করে
জবাব দেওয়া হয়।”