
হরিয়ানার হিসার জেলার বালসামান্দ গ্রামে ৪৮ ঘন্টার নিরন্তর চেষ্টার পর
সেনা ও ন্যাশনাল ডিজাস্টার রিলিফ ফোর্স (এনডিআরএফ)-এর যৌথ প্রচেষ্টায়
উদ্ধার করা গেল আঠারো মাসের শিশুকে। উদ্ধারের পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া
হয়, এবং বর্তমানে শিশুটি সুস্থ আছে বলে জানা যায়।
বালসামান্দ গ্রামের শ্রমিকের ছেলে দেড় বছরের নাদিম বুধবার সন্ধ্যেবেলায়
বন্ধুদের সাথে খেলতে খেলতে হঠাত পা পিছলে পড়ে যায় ১০ ইঞ্চি চওড়া এবং ৫৫ ফুট
গভীর গর্তে। খবর পেয়েই সেখানে ছুটে যান এনডিআরএফ-এর একটি দল, সেনা ও পুলিশ
কর্মীরা। সেখানকার পুলিশের ডেপুটি কমিশনার জানান, শিশুটিকে নিরাপদে বের
করে আনার জন্য প্রাথমিকভাবে একই দূরত্বের উল্লম্ব খাদ খনন করা হয়, ৫০ ফিট
গভীর ও ৩৭ ফিট চওড়া গর্ত করা হয় মূল কুয়োটির কাছে পৌঁছনোর জন্য।
খননকার্যের
মাধ্যমে শিশুটির কাছাকাছি পৌঁছতেই হঠাৎ বাচ্চাটির কান্নার আওয়াজ কানে আসে
উদ্ধারকর্মীদের। তৎক্ষণাৎ খননকাজ বন্ধ রেখে নাইট ভিশন ক্যামেরা ও সিসিটিভির
মাধ্যমে শিশুটির উপর নজর রাখতে শুরু করেন এবং প্রয়োজনীয় খাদ্য, পানীয় ও
নিশ্বাস নেওয়ার জন্য পাইপলাইনের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ শুরু হয়।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, প্রায় ৪০টি জেসিবি মেশিনের সাহায্যে খননকার্য
চালানো হয়, সেনা ও এনডিআরএফ মিলিয়ে ১০০ জন, তাছাড়াও প্রায় ১৫০ জন
পুলিশকর্মীর তৎপরতায় শিশুটিকে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভবপর হয়েছে। হিসার
জেলার আইজি অমিতাভ ধিলো উদ্ধারকারী কর্মীদের “অসীম সাহস ও দক্ষতাকে”
কুর্নিশ জানিয়েছেন।
শিশুটিকে উদ্ধার করে নিরাপদে উপরে উঠে আসতেই “ভারত মাতা কি জয়” বলে
জয়ধ্বনি দিয়ে ওঠেন গ্রামবাসীরা। নাদিমের জন্য চিন্তায় গোটা গ্রামে বন্ধ হয়ে
যায় হোলির উৎসবও।
হিসার জেলার ডিসি অশোক কুমার মীনা জানান, কঠিন উদ্ধারকার্যের পর
শিশুটিকে বের করে আনা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে নিরাপদেই আছে সে। হিসারের
মেডিক্যাল কলেজে শিশুটিকে পাঠানো হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের
আওতায় রাখা হয়েছে তাকে। তিনি আরও বলেন, কে বা কারা এই অবৈধ খনন কাজ
চালিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত আইনি ব্যবস্থাও
নেওয়া হবে। এই ধরনের খোলা কুয়ো আর কোথাও আছে কিনা তাও দেখা হবে যাতে
ভবিষ্যতে এরকম ঘটনা না ঘটে বলেও জানান তিনি।