
স্থূলতা, ডায়াবেটিস এবং গেঁটে বাতে ভুগছেন পলাতক হিরে ব্যবসায়ী মেহুল
চোকসি। শুক্রবার আদালতে ৩৭ দফা টেবিল দাখিল করে এ কথা জানিয়েছেন পলাতক এই
আর্থিক অপরাধী।
তাঁর আবেদনে চোকসি বলেছেন, পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের জালিয়াতি কাণ্ডে
ইডি তদন্ত করতে চাইলে তিনি ভারতে ফিরতে চাননি এ কথা ঠিক নয়। তিনি শারীরিক
কারণে ভারতে ফিরতে পারেননি। অ্যান্টিগার বাসিন্দা চোকসি আগেও জানিয়েছিলেন,
অসুস্থতাজনিত কারণে ৪১ ঘণ্টা বিমানযাত্রা করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়।
পলাতক
আর্থিক অপরাধী আইনের আওতায় এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট যে আবেদন করেছে, তার
ভিত্তিতে শুক্রবার আবেদন করেছেন চোকসি। সে আবেদনে ২০১১ সাল থেকে ২০১৯ সালের
ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত নিজের শারীরিক অসুস্থতার তালিকা দিয়েছেন তিনি।
নিজের অসুস্থতার দৈনন্দিন খুঁটিনাটি জানিয়ে চোকসির দাবি, তিনি ভ্রমণে
অপারগ। ২৭ ফেব্রুয়ারি চোকসির সাম্প্রতিকতম মেডিক্যাল চেক আপ হয়েছে। সেখানে
দেখা গেছে, তাঁর ওজন ২৩৬ পাউন্ড (১০৭ কেজি)) এবং তাঁর বিএমআই ৩৯.৩, যা অতি
ঝুঁকিপ্রবণ ক্লাস থ্রি ওবেসিটির আওতায় পড়ে।
আবেদনে বলা হয়েছে, তাঁর (চোকসির) মেডিক্যাল রেকর্ড থেকে দেখা যাচ্ছে,
নিউ ইয়র্কের নর্থওয়েলাট লেনক্স হাসপাতালে করোনারি অ্যাঞ্জিওগ্রাম হয়েছে এবং
স্টেন্ট বসানো হয়েছে। তাঁর মস্তিষ্ক থেকে জমাট বাঁধা রক্তের চিকিৎসা করা
হয়েছে। শ্রী চোকসির দীর্ঘদিন ধরেই হাইপারটেনশন ও হাইপারকোলেস্টেরোমেলিয়া
রয়েছে। ফলে তাঁকে সবসময়েই অ্যান্টিগায় চিকিৎসকদের নজরদারিতে থাকা উচিত এবং
কোনওক্রমেই তাঁর ভ্রমণ করা উচিত হবে না।
একইসঙ্গে দাবি করা হয়েছে ২০১০ সালের ২৬ অক্টোবর জনৈক চিকিৎসক এইচ এ মার্কোস তাঁর শারীরিক অবস্থা সংকটজনক বলে জানিয়েছেন।
চোকসি অন্য যে সব রিপোর্ট দাখিল করেছেন তাতে দেখা যাচ্ছে, তাঁর
মস্তিষ্কের অ্যাঞ্জিওগ্রামে নানারকমের অস্বাভাবিকতা ধরা পড়েছে এবং তাঁর
কাঁধে ‘ক্যালসিফাইক টেন্ডাইনিটিস’ দেখা গেছে, যার ফলে কাঁধ ফুলে ওঠে, ব্যথা
হয়। এ ছাড়া তাঁর গলব্লাডারে পাথরও দেখা গেছে। একই সঙ্গে চোকসিকে ওজন
কমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গত বছর জুন মাসে মেহুল চোকসি বলেছিলেন সম্প্রতি গণপ্রহারের ঘটনা বৃদ্ধি
পেয়েছে এবং তাঁর জীবনের ঝুঁকি রয়েছে বলে তিনি ভারতে ফিরতে পারবেন না।
আদালতে আগামী মাসে এই আবেদনের শুনানি হবে।