
ভারতের এয়ার স্ট্রাইকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জৈশ-এ-মহম্মদ পরিচালিত
মাদ্রাসার চারটি ভবন ধ্বংস করা গিয়েছে। র্যাডার মারফৎ এমন তথ্যই সামনে
এল। এ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এক সরকারি সূত্র জানিয়েছে, এয়ার
স্ট্রাইকে টার্গেট করা হয় মাদ্রাসা তালিম-উল-কুরানকে। তবে এয়ার স্ট্রাইকে
কি কোনও জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে? এ প্রসঙ্গে ওই সূত্র জানাচ্ছে, কতজন জঙ্গি
মারা গিয়েছে, সেটা পুরোটাই অনুমান ভিত্তিক।
সূত্রের আরও দাবি, এয়ার স্ট্রাইকে জৈশের ডেরা যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে,
তার প্রমাণ রয়েছে গোয়েন্দা বাহিনীর হাতে। চারটি মাদ্রাসা ভবন যে ধ্বংস
হয়েছে তা ধরা পড়েছে সিন্থেটিক অ্যাপারচার র্যাডার (এসএআর)-এ। জৈশের
মাদ্রাসার চত্বরেই ওই চারটি বিল্ডিং ছিল। ওই এলাকায় যে ভারত এয়ার
স্ট্রাইক করেছে, সে কথা স্বীকার করলেও সেখানে কোনও জঙ্গি ঘাঁটি ছিল কিনা
কিংবা কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কিনা, তা জানায় নি পাকিস্তান। বরং
ক্ষয়ক্ষতির কথা অস্বীকার করেছে ইমরান খানের সরকার।
এ প্রসঙ্গে
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এক সরকারি আধিকারিক বলেন, “এয়ার স্ট্রাইকের পর কেন
মাদ্রাসা সিল করল পাক সেনা? কেন সেখানে কোনও সাংবাদিকদের যেতে দেওয়া হল
না? আমাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে। এসএআর-এ ধরা পড়েছে যে চারটি ভবন ধ্বংস করা
হয়েছে। এর মধ্যে একটি ভবনে অতিথিশালা ছিল। সেখানে মাসুদ আজহারের ভাই
থাকত। একটা ‘এল’ আকৃতির বাড়িও ছিল, সেখানেই প্রশিক্ষকরা থাকতেন। আরেকটি
বাড়িতে সেমিনার হত। যাদের কমব্যাট ট্রেনিং দেওয়া হত, তারা আরেকটি ভবনে
থাকত। এই সবকটিই ধ্বংস করা হয়েছে।”
ওই আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, “র্যাডারে যে ছবি ধরা পড়েছে, তা জনসমক্ষে
আনা হবে কিনা, সে ব্যাপারে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। তবে এসএআর-এ ছবিগুলো
স্পষ্ট নয়। আকাশ খুব মেঘলা থাকায় আমরা মঙ্গলবার ভাল স্যাটেলাইট ছবি
পাইনি।” ভারতীয় বায়ুসেনার ইজরায়েলি বোমা সেদিন ওই ভবনগুলিতে আঘাত হানে।
জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করতে ইজরায়েলি এস-২০০০ পিজিএমকে কাজে লাগিয়েছিল
বায়ুসেনা।
এয়ার স্ট্রাইকে মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত, সে ব্যাপারেও
এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, “গোটা এলাকা সিল
করে দিয়েছে পাক সেনা। আমরা কোনও যথোপযুক্ত গোয়েন্দা তথ্য পাইনি। এয়ার
স্ট্রাইকে জঙ্গিদের মৃত্যুর সংখ্যাটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক।”
পাহাড়ি এলাকা
জবায় ভারতীয় বায়ুসেনার বোমা নিক্ষেপের কথা অস্বীকার করেছেন আধিকারিকরা।
ওই এলাকায় সাংবাদিকদের একটি দলকে নিয়ে গিয়ে গর্ত ও গাছের ধ্বংসাবশেষ
দেখিয়েছিল পাক সেনা। এক সেনা আধিকারিক বলছেন, “যদি এস-২০০০ পিজিএম নিক্ষেপ
করা হয়, তাহলে কোনও গর্ত বা গাছের ধ্বংসাবশেষ থাকার কোনও সম্ভাবনাই থাকে
না। কারণ, মাটির নীচে ঢুকে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটায় পিজিএম। এর জেরে ঢিপি তৈরি
হয়।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, নিয়ন্ত্রণরেখা
পেরিয়ে বোমা নিক্ষেপ করতে চেয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনা। কিন্তু পরে ঠিক করা
হয়, নিয়ন্ত্রণরেখার এপার থেকেই পিজিএম নিক্ষেপ করা হবে। সাধারণত প্রায়
১০০ কিমি দূর থেকে এস-২০০০ পিজিএম নিক্ষেপ করা যায় বলে জানা গিয়েছে।