
অবিলম্বে কুলভূষণ যাদবের মৃত্যুদণ্ডের সাজা রদ করে তাঁকে মুক্ত করা হোক,
আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে এমন আর্জিই রাখল ভারত সরকার। সোমবার কুলভূষণ
মামলার শুনানিতে হেগে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে ভারতের হয়ে সওয়াল করেন
আইনজীবী হরিশ সালভে। আজ এ মামলায় পাকিস্তানের বক্তব্য শুনবে আদালত।
উল্লেখ্য, পুলওয়ামায় আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার পর দু’দেশের মধ্যে উত্তপ্ত
আবহেই শুরু হয়েছে কুলভূষণ মামলার শুনানি।সোমবার আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে
পাক সামরিক আদালতের নির্দেশের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন হরিশ সালভে। পাক সামরিক
আদালতের নির্দেশকে অবিলম্বে নাকচ করে কুলভূষণকে মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে
আদালতে সওয়াল করেছে ভারত সরকার। এমনকি এজন্য পাকিস্তানকে নির্দেশ দেওয়ার
অনুরোধও রেখেছেন সালভে। তা সম্ভব না হলে, পাকিস্তানের সিদ্ধান্তকে ‘বেআইনি’
অ্যাখ্যা দিয়ে কুলভূষণকে রেহাই দেওয়ার দাবি তুলেছে ভারত।
অন্যদিকে, বারবার
অনুরোধ করা সত্ত্বেও কুলভূষণ যাদবের কনস্যুলার অ্যাকসেসের অনুমতি না মেলা
নিয়েও এদিন সরব হন সালভে। তিনি বলেন, কুলভূষণের কনস্যুলার অ্যাসকেসের জন্য
ভারতের পক্ষ থেকে ১৩ বার অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তান সেই অনুরোধে
কোনও সাড়া দেয়নি। এজন্য পাকিস্তান ভিয়েনা কনভেনশনের সিদ্ধান্ত ভেঙেছে বলে
অভিযোগ তুলেছে ভারত।
কুলভূষণ যাদবকে নিয়ে পাক সামরিক আদালত সঠিক সিদ্ধান্ত
নেয়নি বলে এদিন আদালতে জানান সালভে। তিনি বলেন, সে দেশের শীর্ষ সেনা
আধিকারিকদের প্রভাব রয়েছে পাক সামরিক আদালতে। বিচারপ্রক্রিয়ার জন্য ওই সেনা
আধিকারিকদের কোনও প্রশিক্ষণ নেই। তাছাড়া কুলভূষণের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ
নেই বলেও দাবি করেন ভারতীয় আইনজীবী। সালভে আরও বলেন, যে যৌথ তদন্তকারী দল
কুলভূষণের তদন্ত চালিয়েছিল, তারা কোনও নথি জমা দেয়নি। সে দেশে
বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন কুলভূষণের কোনও আইনজীবী ছিলেন না। পাকিস্তানে
কুলভূষণের প্রতি অবিচার করা হয়েছে বলে সরব হন সালভে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৩
মার্চ ইরান থেকে পাকিস্তান সীমান্ত পেরোনোর সময় কুলভূষণ যাদব ধরা পড়েন বলে
জানিয়েছিলেন পাক আধিকারিকরা। চরবৃত্তির অভিযোগে ২০১৭ সালের এপ্রিলে পাক
সামরিক আদালতে তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানো হয়। এরপরেই কুলভূষণ ইস্যুতে
আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের দ্বারস্থ হয় ভারত। কূলভূষণ চর নন বলে দাবি করেছে
ভারত। ২০১৭ সালে কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ডের সাজায় স্থগিতাদেশ দেয় আন্তর্জাতিক
ন্যায় আদালত।