
বিগত ১০ই
মার্চ ২০১৫, ত্রিপুরা রাজ্যের ধর্মনগর থানার অন্তরগত শ্রীপুর গ্রামের ৫নং ওয়ার্ডে একটি
হ্রদয় বিদারক হত্যার সাক্ষী হতে হলো সমগ্র শ্রীপুর বাসিকে। বিয়ের ঠিক নয় মাসের মাথায়
শ্রীপুর ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শ্রী নকুল দাসের কন্যা পুনম দাসকে নির্মম ভাবে পুড়িয়ে
হত্যা করা হয়। পুনম দাসের পিতা ঘটনার দিনই পুনম দাসকে তার শশুর বাড়িতে হত্যা করা হয়েছে
এই অভিযোগ এনে ধর্মনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান অভিযুক্ত বিনতা
দাস (শাশুড়ি), আশিষ দাস (স্বামী) ও মনিকা দাস সাও (ননদ) কে অভিযুক্ত করে মামলা করা
হয়। যদিও তৃতীয় অভিযুক্ত মনিকা দাস (সাও) কে ঘটনার দিনই কোন এক অজ্ঞাত কারনে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং অপর দুই অভিযুক্তকে
পর্যায় ক্রমে আদালতে সোপর্দ করা হয় ও মহকুমা পুলিশ অধিকারিক ঘটনার তদন্ত শুরু করেন
এবং বিনতা দাস
(শাশুড়ি) ও আশিষ দাস (স্বামী) এর তিন মাসের কারাবাস হয়। পরবর্তী সময়ে পুনম দাসের পরিবার পুলিশি তদন্তে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করায়
ত্রিপুরা পুলিশের মহানির্দেশক মহাশয়ের আদেশে উক্ত ঘটনার তদন্তভার CID Org, Tripura এর হাতে দেওয়া হয় এবং
দীর্ঘ এগার মাসের তদন্ত শেষে বিগত ১০ই মে ২০১৬ইং বিস্তারিত চার্জশিট ধর্মনগর জেলা
আদালতে জমা করেন।
পুনম দাসকে নির্মম ভাবে পুড়িয়ে হত্যা
করার ঘটনা যেমন সকল স্থরের জনগনকে মর্মাহত করে তার উপর পুনম দাসের পরিবারের প্রতি রাজ্য
প্রশানের নির্মম পরিহাস জনমনে ক্ষোবের জন্ম দেয় আর তাঁরই বর্হিপ্রকাশ ০৫ই সেপ্টেম্বরের
মোমবাতি মিছিল। যদিও তাঁতে আমাদের নিদ্রিত প্রশাসনের নিদ্রায় সামান্যতম ব্যাঘাত
ঘটেনি। বিগত ০৬ই জুন ২০১৫ইং থেকে বিনতা দাস (শাশুড়ি) ও আশিষ দাস (স্বামী) শর্তাধিন জামিনে মুক্ত
থাকা অবস্তায় Directorate of Prison,
Government of Tripura কতৃক বিগত ২১শে জুলাই ২০১৫ইং আশিষ দাসকে ধর্মনগর সাব জেল এ প্রিজন ফার্মাসিষ্ট
পদে নিযুক্তি দেওয়া হয়। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে হত্যা মামলার মতো একটি সংবেদনশীল মামলার
প্রধান অভিযুক্ত যে শর্তাধিন জামিনে মুক্ত আছে সেইরকম একজন ব্যাক্তি কিভাবে সরকারী
চাকুরিতে নিযুক্তি পায়। তথ্য জানার অধিকার আইনের মাধ্যমে প্রকাশ পায় যে, আশিষ দাস সরকারী চাকুরিতে নিযুক্তি পাওয়ার আগে বা পরে (আজ অবদি) কোন রকমের
পুলিশ ভেরিফিকেশন করানো হয়নাই। এমন কি বিগত এক বছরের মধ্যেও উত্তর ত্রিপুরা জেলা শাসকের
দ্বারা আশিষ দাসের Attestation Form ভেরিফিকেশন করা হয় নাই। এমত
পরিস্তিতিতে একটা প্রশ্ন বারবার মনে জাগে যে, আমাদের রাজ্য প্রশাসন কি শুসকের
ভুমিকা পালন করছেন? নাকি অন্যায়ের প্রতি অন্যায় করে অন্যায়কে সমাজে মাথা উচু করে
বেঁচে থাকার দৃষ্টান্ত তৈরি করতে চাইছেন?
পুনম দাসকে নির্মম ভাবে পুড়িয়ে হত্যা
করার ঘটনাটি সকল স্তরের জনগণকে মর্মাহত করলেও, কিছু কিছু ভদ্রভেশি-অভদ্রলোকেদের
বিবেকে সামান্যতম দাগ কাটেনি। আর সেইসব মানুষ রুপের অমানুষেরা সমাজে নাকি “নেতা”
বলে পরিচিত। কোন একজায়গায় পড়েছিলাম “Some leaders are the refuge of last rascals” আজ-কাল
এই কথাটাই বড় বেশী সত্যি বলেই মনে হচ্ছে। কারন তথ্য জানার অধিকার আইনের মাধ্যমে
প্রকাশ পায় যে, আশিষ দাসের সরকারী চাকুরী পাওয়ার ক্ষেত্রে “Local Reference” দিয়ে
যে দু’জন ব্যক্তি সাহায্য করেছেন তাদের মধ্যে একজন হলেন শ্রীঃ কৃপেশ ভট্টাচার্য,
এবং অন্যজন
হলেন, শ্রীঃ নিতাই ভৌমিক।
‘জোর যার মুলুক তার’ এই মধ্যযুগীয় নীতি
নিয়ে সমগ্র রাজ্য জুরে নারী নির্যাতন, ধর্ষন বা পনের দায়ে হত্যার মতো পৈচাশিক ঘটনা
এবং অপরাধীর দাপাদাপি এ কী প্রমান করে? অন্যায়-অন্যায়’ই কিন্তু আজকাল নেতা-নেত্রী’রা
ব্যাক্তি স্বার্থে দফায় দফায় তার সংজ্ঞা পাল্টে দিতে চাইছেন। তাঁদের চোখে আজও লুন্ঠনকারীর থেকে
লুণ্ঠিতরাই অপরাধী। তবু আজও যাদের শরীরের রক্ত জল হয়ে যায়নি, যাদের মনুষত্য বোধ
বিলুপ্ত হয়ে যায়নি তাঁরাই ন্যায়ের লষ্ক্যে সংগ্রাম করে চলেন। যদিও এমন এক
অবিসংবাদী প্রত্যাশা সত্য হিসাবে স্বীকার করতে পারছেন কজন-আরও সবিশেষে বলতে গেলে
সাধারন জনগণের মধ্যে কতজন? এটাই একটা মৌলিক প্রশ্ন।
NB: Name of two people mentioned
in the article as a leader i.e Kripesh Bhattacharjee and Nitai Bhowmik is/was
disclosed via rti Act 2005 and So, the writer
and/or blogger are/will not be held responsible for any kind of inconveniences.